রথীন রায়।
তিনি তোষামোদের রাস্তায় হাঁটতেন না। ভুলত্রুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতেন। দেশের অর্থনীতি ‘মাঝারি আয়ের ফাঁদ’-এ পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন। প্রশ্ন তুলেছিলেন বাজেটে হিসেবের গরমিল, বিদেশ থেকে ডলারে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে। এহেন রথীন রায়কে আজ প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ থেকে ছেঁটে ফেলল কেন্দ্র।
রথীন বর্তমানে দিল্লির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসির ডিরেক্টর। বাদ গেলেন আর এক সদস্য, ব্রুকিংস ইন্ডিয়ার রিসার্চ ডিরেক্টর অর্থনীতিবিদ শমিকা রবিও। ডলারে ঋণ নেওয়ার প্রশ্নে রথীনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন শমিকা। অর্থ মন্ত্রক যথেষ্ট দ্রুত গতিতে কাজ করছে না বলে মত দিয়েছিলেন।
আজ প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ নতুন করে গঠন করা হয়েছে। বিবেক দেবরায়ই চেয়ারম্যানের পদে থাকছেন। সদস্য-সচিব থাকছেন রতন ওয়াটালই। পুরনো সদস্যদের মধ্যে একমাত্র থাকছেন ইন্দিরা গাঁধী ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের অধ্যাপক অসীমা গয়াল। নতুন সদস্য হচ্ছেন জে পি মর্গানের অর্থনীতিবিদ সাজ্জিদ চিনয়।
মোদী আমলে এর আগে অরবিন্দ পানাগাড়িয়া, রঘুরাম রাজন, অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম, উর্জিত পটেলরা বিদায় নিয়েছেন। এ বার রথীনকে সরানোয় প্রশ্ন উঠেছে, সরকার কি এমন অর্থনীতিবিদদেরই চাইছে, যাঁরা সব কথায় সায় দেবেন! মোদী সরকার যখন ভারতকে দ্রুততম অর্থনীতির দেশ বলে ঢাক পেটাচ্ছিল, তখন রথীন বলেছিলেন, অর্থনীতির গতিতে একমাত্র ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করছে উচ্চ আয়ের ১০ কোটি মানুষের কেনাকাটা। তার গতি শ্লথ হয়ে এসেছে। তা আর বাড়বে না। তা-ই হয়েছে। ডলারে ধার নেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলেছিলেন, যত বড় জনমতই থাকুক, আলোচনা ছাড়া এত বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নিতে পারে না। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ডলারে ঋণ নিলে তার মূল্য চোকাতে হবেই।
এ দিনই বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর কটাক্ষ, মোদী যে সব অর্থমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ এনেছেন, তাঁরা কেউই ম্যাক্রো ইকনমিক্স বোঝেন না।