চলন্ত ট্রেন থেকে এক যুবতীকে ফেলে দিয়ে আহত অবস্থাতেই তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল সে। পাঁচ দিন পরে ওই যুবতী হাসপাতালে মারা যাওয়ায় জুড়েছিল খুনের অভিযোগও। কেরল হাইকোর্ট ফাঁসির সাজা দিয়েছিল তাকে। বৃহস্পতিবার সেই মামলা থেকে খুনের ধারাটাই খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে শুধু ধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন সাজা বহাল রইল গোবিন্দচামির। ২০১১ সালে কেরলের যুবতী সৌম্যার ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনার আসামির ফাঁসি এ ভাবে মকুব হওয়ায় স্তম্ভিত মৃতার পরিবার। কেরল সরকারও জানিয়েছে, এই রায়ে তারা অসন্তুষ্ট।
কোচির একটি শপিং মলের কর্মী সৌম্যা ২০১১-র পয়লা ফেব্রুয়ারি যাচ্ছিলেন এর্নাকুলাম-শোরানপুর প্যাসেঞ্জারের মহিলা কামরায়। সেই সময়ে তাঁর উপরে চড়াও হয় তামিলনাড়ুর বিরুদানগরের বাসিন্দা গোবিন্দচামি। ট্রেনের গতি ছিল কম। সৌম্যাকে ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলার পর সে নিজেও নেমে পড়ে। আহত যুবতীকে তুলে লাইনের ধারের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে সে। ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট মৃত্যুদণ্ড দেয় গোবিন্দচামিকে। ধর্ষণের ধারায় হয় যাবজ্জীবন সাজা। কেরল হাইকোর্ট তা বহাল রাখে। গোবিন্দচামি সুপ্রিম কোর্টে যায়। মামলাটি শোনে বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি পি সি পন্থ এবং বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের বেঞ্চ। ২২ পাতার রায়ে আজ তাঁরা বলেছেন, ওই তরুণীকে চিত করে শুইয়ে রাখার সময়ে তাঁর মৃত্যু ঘটানোর অভিপ্রায় বা তাঁর মৃত্যু যে ঘটতে পারে, এমন কোনও ভাবনা ছিল না গোবিন্দচামির। তা ছাড়া যুবতী মারা যান ক’দিন পরে, হাসপাতালে। কাজেই খুনের ধারায় আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।
আরও পড়ুন- কাশ্মীরে মোদীর হাতিয়ার সেনাই, মতভেদ সরকারে
তবে সর্বোচ্চ আদালত মেনে নিয়েছে, ওই তরুণী গুরুতর আহত হওয়া সত্ত্বেও নির্মম ভাবে তাঁকে ধর্ষণ করে গোবিন্দচামি। সেই অপরাধে নিম্ন আদালত ও হাইকোর্টের দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি, ইচ্ছাকৃত ভাবে গুরুতর আঘাত করার অপরাধে তাকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড
দিয়েছে আদালত। তবে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘‘মেয়েটির পরিবারকে সুবিচার দিতে আমরা সেরা আইনজ্ঞদের সাহায্য নেব।’’