Rajasthan Crisis

ফের অধিবেশন ডাকার প্রস্তাব গহলৌতের

কংগ্রেস শুরু থেকেই বলে আসছে, রাজস্থানে সচিন পাইলটের সঙ্গে গহলৌতের ক্ষমতার দ্বন্দ্বকে ব্যবহার করে বিধায়ক কেনাবেচার মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে চক্রান্ত চালাচ্ছে বিজেপি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জয়পুর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০ ০৪:০২
Share:

ছবি: পিটিআই।

রাজ্যপাল বনাম মুখ্যমন্ত্রীর কৌশলী প্যাঁচে রাজস্থানের সরগরম। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত চাইছেন, দ্রুত বিধানসভায় আস্থাভোট মিটিয়ে ফেলে আগামী ৬ মাসের জন্য নিশ্চিন্ত থাকতে। কিন্তু রাজ্যপাল প্রাক্তন বিজেপি নেতা কলরাজ মিশ্র তাঁকে সেই সুযোগ দিতে চান না। মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত আস্থাভোটের জন্য বিধানসভার অধিবেশন ডাকার প্রস্তাব দিলেও রাজ্যপাল তা খারিজ করে গহলৌতকে অন্য প্রস্তাব দিতে বলেন। রবিবার গহলৌত নতুন প্রস্তাবেও বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকার আর্জিই জানিয়েছেন রাজ্যপালের কাছে। ৩১ তারিখে অধিবেশন শুরুর কথাও প্রস্তাবে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজস্থানের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্যই এই অধিবেশন ডাকাটা জরুরি। নতুন প্রস্তাবে আস্থাভোটের প্রসঙ্গই রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী। নতুন প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ না-করে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি ভাবনা-চিন্তা করছেন।

Advertisement

কংগ্রেস শুরু থেকেই বলে আসছে, রাজস্থানে সচিন পাইলটের সঙ্গে গহলৌতের ক্ষমতার দ্বন্দ্বকে ব্যবহার করে বিধায়ক কেনাবেচার মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে চক্রান্ত চালাচ্ছে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশে এই কাজে তারা সফল হয়েছে। কিন্তু রাজস্থানে প্রথম পর্যায়ে সুবিধা করে উঠতে না-পারলেও আশা ছাড়ছে না বিজেপি। এ বার তারা রাজ্যপালকে ব্যবহার করে অচলাবস্থা জিইয়ে রাখতে চাইছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি যাতে কংগ্রেসের বিধায়ক ভাঙানোর সময় পায়, সেই কারণেই কলরাজ কালক্ষেপ করে চলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী কাল রাজভবনে দাঁড়িয়েই রাজ্যপালের এই কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা

রাহুল গাঁধী রবিবার টুইট করে রাজস্থানের ঘটনাবলিকে ‘গণতন্ত্র ও সংবিধানের উল্লঙ্ঘন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। রাহুল বলেছেন, ‘রাজ্যপালকে অবিলম্বে বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে হবে, কারণ সেটা আমাদের অধিকার।’ গণতন্ত্র রক্ষায় একজোট হয়ে সরব হওয়ার জন্য রাজস্থানের মানুষের কাছেও আবেদন জানিয়েছেন রাহুল।

Advertisement

আরও পড়ুন: নেশার ঘোরে ছুরি গিললেন তিনি, বার করল এমস

বিদ্রোহী উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলটকে দলবিরোধী কাজের জন্য ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করেছে দল। দলের হুইপ সত্ত্বেও পরিষদীয় বৈঠকে যোগ না-দেওয়ায় বিধায়ক পদ থেকেও তাঁকে অনুগামী-সহ সাসপেন্ড করেছেন বিধানসভার স্পিকার। এর পরে সচিন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে তাঁকে ও তাঁর অনুগামীদের দেওয়া স্পিকারের শাস্তিকে বেআইনি ঘোষণার আবেদন জানান। হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য সচিনদের বিরুদ্ধে শাস্তি স্থগিত করে দেয়। কংগ্রেস নেতৃত্ব এর পরে সুপ্রিম কোর্টে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বলে, শাস্তি দেওয়ার অধিকার ও ক্ষমতা বিধানসভার স্পিকারের আছে। হাইকোর্টের

স্থগিতাদেশ খারিজ করা হোক। সর্বোচ্চ আদালত জানায়, শাস্তি নিয়ে সিদ্ধান্তের আগে স্পিকারের ক্ষমতা ও অধিকারের প্রশ্নটি খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ সেটি সাংবিধানিক প্রশ্ন। সোমবার বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হতে পারে। তবে তার আগে সচিনের বিরুদ্ধে এই আইনি লড়াই নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে দু’রকম মত রয়েছে। এক দলের বক্তব্য, বিজেপির বাঘা বাঘা আইনজীবীদের নিয়ে সচিন দলকে চ্যালেঞ্জ করায়, কংগ্রেস নেতৃত্বের উচিত সেই পথেই ‘ক্ষমতালোভী’ এই নেতাকে ঘায়েল করা। আবার আর এক দলের বক্তব্য, বিজেপি সরকার ফেলতে ব্যর্থ হলেও যে হাল ছাড়েনি, তার প্রমাণ রাজ্যপালের কালক্ষেপ। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উচিত সুপ্রিম কোর্টের আবেদন ফিরিয়ে নিয়ে সচিনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটা মীমাংসায় আসা। এর মধ্যেই বিএসপি দলের ৬ বিধায়ককে নির্দেশ দিয়েছে, আস্থাভোট হলে তারা যেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট দেয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement