North India Flood Situation

জলমগ্ন উত্তর ভারতে মৃত ৩৭! বিপদসীমা পেরোল যমুনার জলস্তর, ভাসছে হিমাচল-উত্তরাখণ্ড

বিগত কয়েক দিন ধরেই অবিরাম বর্ষণে ভাসছে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ। এখনই এই বৃষ্টি থামবে না বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩ ১০:৪০
Share:

প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন দিল্লির রাস্তা। ছবি: পিটিআই ।

ভারী বর্ষণের কারণে বিপর্যস্ত উত্তর ভারত। প্রবল বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, পঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীরের মতো রাজ্যগুলি। গত তিন দিনে ভূমিধস এবং হড়পা বানে চলে গিয়েছে কমপক্ষে ৩৭টি প্রাণ।

Advertisement

বিগত কয়েক দিন ধরেই অবিরাম বর্ষণে ভাসছে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ। এখনই এই বৃষ্টি থামবে না বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। হিমাচল প্রদেশে মান্ডি, কিন্নর এবং লাহুল-স্পিতিতে ইতিমধ্যেই বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মৌসম ভবনের তরফে মঙ্গলবার হিমাচলের প্রায় সব অংশেই ভারী বৃষ্টিপাতের লাল এবং কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সে রাজ্যের সরকারের তরফে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু অবিরাম বৃষ্টির মধ্যে মানুষকে বাড়ির ভিতরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। পাশাপাশি সরকারের তরফে বেশ কয়েকটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।

দিল্লিতেও মঙ্গলবার বৃষ্টিপাতের কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যমুনার জলস্তর ইতিমধ্যেই বিপদসীমা পেরিয়ে গিয়েছে বলে কেন্দ্রীয় জল কমিশন জানিয়েছে। নদীর জল প্রত্যাশিত সময়ের আগেই বিপদসীমা অতিক্রম করেছে বলে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। দিল্লিতে প্রশাসনের তরফে তুলনামূলক ভাবে নিচু এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ শিবির এবং কমিউনিটি সেন্টারও তৈরি করা হয়েছে। বন্যাপ্রবণ এলাকা এবং যমুনার জলস্তর নিরীক্ষণের জন্য দিল্লি সরকার ১৬ টি কন্ট্রোল রুম তৈরি করেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার তৈরি আছে বলেও জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল।

Advertisement

কুমায়ুন হিমালয়ে ভারী বৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ডের মানুষও। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি মঙ্গলবার রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত, বন্যা এবং ভূমিধসের সতর্কতা জারি করে চারধামের তীর্থযাত্রীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ধামি বলেন, ‘‘প্রতি বর্ষায় আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হয়। এই ঋতুতে আমরা সতর্ক থাকি। আমরা চারধামের সকল পুণ্যার্থীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছি এবং আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখেই যাত্রা শুরু করার অনুরোধ করেছি।’’

টানা তিন দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিতে ভিজছে পঞ্জাব এবং হরিয়ানাও। দুই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কনপক্ষে ন’জন নিহত হয়েছেন। পঞ্জাব সরকার ১৩ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

উত্তর ভারতে ভারী বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন রাজ্যে হড়পা বানে প্রচুর গাড়ি, রাস্তা, সেতু, দোকানপাট ভেসে গিয়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে চাষের জমি। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বহু রাস্তা। উত্তর ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই এই একই চিত্র ধরা পড়ছে।

মানালিতে দোকানপাট এবং কুলু, কিন্নর এবং চাম্বাতে হড়পা বানে যানবাহন ভেসে যাওয়ার বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। কসোলে নদীর জলের স্রোতে একটি যাত্রিবাহী বাসের ভেসে যাওয়ার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। হিমাচলের সোলান জেলার বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র পরওয়ানুর একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, জলের তোড়ে রাস্তা থেকে ভেসে যাচ্ছে একের পর এক গাড়ি। আর তা দেখে আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করছেন স্থানীয়রা। যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।

প্রবল বৃষ্টিতে প্রায় সমগ্র উত্তর ভারত জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় তৎপর সেনাবাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির বেশ কয়েকটি জায়গায় ইতিমধ্যেই ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement