Rain Percentage in Monsoon

লেহ, লাদাখে ৬০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি, বর্ষায় ঘাটতি উত্তর-পূর্বে, বলছে মৌসম ভবনের রিপোর্ট

গত কয়েক দিন ধরেই বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর ভারত। দিল্লি থেকে শুরু করে হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ডে তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেও বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৩ ১৪:৪৬
Share:

বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচলের দৃশ্য। ছবি: পিটিআই।

যেখানে প্রতি বছর অনেক বৃষ্টি হয়, সেখানে এ বছর বৃষ্টির পরিমাণ তুলনামূলক কম। আবার যেখানে খুব বেশি বৃষ্টি হতে দেখা যায় না, সেই এলাকাগুলিই এ বার বর্ষায় কার্যত ভেসে গিয়েছে। মৌসম ভবনের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।

Advertisement

মৌসম ভবন রবিবার একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। তাতে দেশের মোট ৭৬৬টি জেলার চলতি বছরের বর্ষার খতিয়ান রয়েছে। দেখা গিয়েছে, উত্তর এবং মধ্য ভারতের একটা বড় অংশে এ বছর বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি। গুজরাত, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের কিছু অংশ এবং তামিলনাড়ু এবং কেরলে অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০ থেকে ৫৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

গত কয়েক দিন ধরেই বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর ভারত। দিল্লি থেকে শুরু করে হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ডে তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কোথাও কোথাও। টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন রাস্তাঘাট এবং বিদ্যুতের সমস্যায় ব্যাহত হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। কোথাও রাস্তায় উপড়ে পড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। হড়পা বান এবং মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে বহু এলাকা। ভেঙেছে সেতু। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দুর্যোগকবলিত মানুষদের উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিয়েছেন। অনেক বাড়িঘর এবং চাষের ক্ষেত বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন দিনের দুর্যোগে উত্তর ভারতে মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে মৌসম ভবনের তরফে বিভিন্ন এলাকায় লাল এবং কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় হড়পা বান এবং ভূমিধসের সতর্কতাও জারি করেছে মৌসম ভবন।

টানা বৃষ্টিতে যমুনার জল বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলেছে। ক্রমে জলস্তর আরও বাড়ছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল সোমবার বৈঠক ডেকেছেন। দিল্লিতে বাতিল করা হয়েছে সরকারি কর্মীদের সপ্তাহান্তের ছুটি। গত শনিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত দিল্লিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৫৩ মিমি। ১৯৮২ সালের পর জুলাই মাসে কোনও এক দিনে এই প্রথম এত পরিমাণে বৃষ্টি হল দিল্লিতে।

কেরলেও বৃষ্টিতে জনজীবন ব্যাহত হয়েছে। গত দু’দিনে দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। নিচু এলাকাগুলি এখনও জলের তলায় ডুবে। কেরল সরকার স্কুলে ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছে বেশ কিছু দিনের জন্য। একই সঙ্গে কর্নাটক, তামিলনাড়ু এবং তেলঙ্গানাতেও বৃষ্টি হয়েছে।

লাদাখও অসময়ের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত। প্রবল তুষারপাত এবং বৃষ্টির কারণে আগামী কয়েক দিন সেখানে লাল সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। লেহ্‌ এবং কারগিল জেলা পুরু বরফের চাদরে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। বছরের এই সময়ে এমন তুষারপাত এবং বৃষ্টি ওই এলাকায় স্বাভাবিক নয়।

মৌসম ভবনের পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব ভারতে এ বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনায় অনেক কম। মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম এবং অসমের একাংশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০ থেকে ৯৯ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। যদিও অসমের কোথাও কোথাও বেশি বৃষ্টি হয়েছে এ বছরও। যে কারণে রাজ্যের একাংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বন্যায় অনেক ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় এ বছর বৃষ্টিপাতে ঘাটতি রয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের নানা জেলাতেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement