রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। ছবি পিটিআই।
রেলে বেসরকারি লগ্নি অবশ্যই স্বাগত, তা বলে সামগ্রিক ভাবে ভারতীয় রেলকে কখনওই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে না বলে সংসদে দাবি করলেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।
নরেন্দ্র মোদী সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেই দেশ জুড়ে বিভিন্ন রুটে ১৫১টি ট্রেন বেসরকারি হাতে তুলে দিয়েছে। রেলের অব্যবহৃত জমি, সংস্কার সাধনের উদ্দেশ্যে নয়াদিল্লি বা মধ্যপ্রদেশের হবিবগঞ্জের মতো স্টেশনকেও দেওয়া হয়েছে বেসরকারি হাতে। পাশাপাশি, আইআরসিটিসি-র মতো রেলের অধীনস্থ সংস্থার শেয়ার ছাড়া হয়েছে বাজারে। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, রেলকে ধাপে ধাপে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে মোদী সরকার। গত কাল থেকে লোকসভায় শুরু হওয়া রেল মন্ত্রকের বাজেট বরাদ্দ সংক্রান্ত বিতর্কে রেলকে এ ভাবে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি কৌশলের বিরুদ্ধে সরব হন বিভিন্ন দলের সাংসদেরা। কংগ্রেস সাংসদ রভনীত সিংহ ব্যাঙ্ক থেকে রেল— সরকারের সব ক্ষেত্রের বেসরকারিকরণের নীতির সমালোচনায় সরব হন। বেসরকারিকরণের ফলে এক দিকে সরকারি সম্পত্তি হাতছাড়া হবে, অন্য দিকে কয়েক লক্ষ মানুষ কাজ হারাবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আজ বিতর্কের জবাবে গোড়াতেই রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি বা তাঁর সরকার কোনও ভাবেই রেলের বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছেন না। তবে দক্ষতার স্বার্থে রেলে বেসরকারি বিনিয়োগ আসা উচিত বলেই মনে করেন তিনি। গয়ালের কথায়, ‘‘রেল প্রত্যেক ভারতীয়ের সম্পত্তি। তাই রেলের কখনওই বেসরকারিকরণ হবে না। রেল আগামী দিনেও সরকারের হাতেই থাকবে।’’ তবে একই সঙ্গে রেলের সার্বিক সংস্কার ও পরিকাঠামোর উন্নতির প্রশ্নে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের হাতে হাত মিলিয়ে চলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে সরব হন রেলমন্ত্রী। তাঁর যুক্তি, সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্র পরস্পরের হাত ধরে চললে দেশের বৃদ্ধির লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হবে। বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ। সরকার রেলকে কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখে, তা বোঝাতে গয়াল বলেন, ‘‘২০১৯-২০ আর্থিক বছরে রেলে বরাদ্দ ছিল ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা। এ বছর তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২.১৫ লক্ষ কোটি টাকা। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক হল রেল। ভারতীয় রেলের সামগ্রিক উন্নতিতে সরকার দায়বদ্ধ।’’