প্রথমে সেনাকর্মীরা। পুলিশকর্মীরা তার পর। এ বার একই পথে পা বাড়ালেন রেলকর্মীরাও। তাঁদের কাজও ঝুঁকিবহুল তাই চাই ‘এক পদ এক পেনশন’— এমনই দাবি জানালেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে তাঁদের সেই দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন রেলকর্মীরা।
রেলকর্মীদের সংগঠন ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান রেলওয়েমেন (এনএফআইআর) রেলকর্মীদের জন্য অভিন্ন পেনশন প্রকল্পের এই দাবি জানিয়েছে। এনএফআইআর-এর সাধারণ সম্পাদক এম রাঘাভাইয়া জানিয়েছেন, কর্মী এবং অফিসার নিয়ে ভারতীয় রেলে কাজ করেন ১৩ লক্ষ জন। এর মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ কর্মীই কাজ করেন প্রত্যন্ত এলাকায়। অনেক এলাকায় আবার বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরও উপদ্রব থাকে। রাঘাভাইয়ার অভিযোগ, এ সব সমস্যা নিয়েই কাজ করেন রেলকর্মীরা। প্রতি বছর গড়ে কর্মরত অবস্থায় ৮০০ জন কর্মীর মৃত্যু হয় দুর্ঘটনায়। কর্মরত অবস্থায় আহত হন তিন হাজার রেলকর্মী। সেনাদের মতো তাঁরাও ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেন। তাই তাঁদেরও ‘এক পদ এক পেনশন’ প্রকল্পের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন রেলকর্মীরা।
দীর্ঘ দিনের আন্দোলনের শেষে সম্প্রতি সেনাকর্মীদের ‘এক পদ এক পেনশন’-এর দাবি মেনে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অনশন তুলে নিলেও আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীরা। সেনার পর একই দাবি তোলেন পুলিশকর্মীরা। অভিন্ন পেনশনের আওতায় তাঁদের আনার দাবি জানায় পুলিশকর্মীদের সংগঠন ইন্ডিয়ান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন। সপ্তম বেতন কমিশনের কাছে ‘এক পদ এক পেনশন’ নীতি কার্যকর করার আর্জি জানায় পুলিশকর্মীদের সংগঠন। পুলিশকর্মীদের বক্তব্য, ২০০৬ সালের আগে অবসর নেওয়া পুলিশকর্মীরা তার পরে অবসর নেওয়া কর্মীদের চেয়ে অনেক কম হারে বেতন পাচ্ছেন। এই বৈষম্য অবিলম্বে মেটানোর দাবি জানিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। তাঁদের দাবি, সেনাবাহিনীর মতো তাঁদেরকেও ঝুঁকির কাজ করতে হয়। দিনে ১২-১৩ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। অনেক সময়ই তাঁরা সাপ্তাহিক ছুটি পান না। এমনকী, গোটা মাসেও ছুটি পান না। বিভিন্ন উৎসবের দিনে পুলিশকর্মীদের মাত্র ৭.৮৫ শতাংশ কোনও ক্রমে ছুটি পান। উৎসবের দিন হোক বা সাধারণ দিন, রাতবিরেতে বা অসময়ে কাজের রুটিন তাঁদের জন্য নিত্যনৈমিত্তিক। পুলিশের তরফে বলা হয়, শুধুমাত্র ২০১৩ সালেই কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত চার হাজার পুলিশকর্মীর। জখম হয়েছেন অন্তত সাড়ে তিন হাজার। অন্য দিকে, ২০১২ থেকে ২০১৫-র ৩ অগস্ট পর্যন্ত কর্তব্যরত অবস্থায় সেনা-সহ বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীর মৃত্যুর সংখ্যা ২০১।