রেলভবন।—ফাইল চিত্র।
নামে রেলকর্মী। আসলে সরকারি খরচে পদস্থ রেল আধিকারিকদের ‘গৃহভৃত্য’। ওই সব চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর (রেলের ভাষায় খালাসি) উপরে এক শ্রেণির আধিকারিক ও তাঁদের পরিবার অমানবিক ব্যবহার করে থাকেন বলে বহু বার অভিযোগ উঠেছে। কর্মী সঙ্কোচনের সুযোগে রেল মন্ত্রক ওই পদে নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেল সূত্রের খবর, দু’দিন আগেই রেলের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। তার পরেই ওই সিদ্ধান্ত।
ব্রিটিশ আমলে অনেক রেল আধিকারিককে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়োগ করা হত। মূলত, তাঁদের জন্য নিয়োগ করা হত ওই খালাসি বা বাংলো পিওনদের। পরবর্তী সময়ে সরকারি পরিভাষায় এঁদের ‘টেলিফোন অ্যাটেন্ডেন্ট কাম ডাক খালাসি’ বলা হয়। এঁদের মূলত নিয়োগ হত পদস্থ রেল আধিকারিকদের বাড়ির কাজকর্মে। রেলের শ্রমিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, পদস্থ আধিকারিক ও তাঁদের পরিবারের একাংশের বিরুদ্ধে খালাসিদের প্রতি অমানবিক ব্যবহারের বহু অভিযোগ ফি বছর সংগঠনের কাছে জমা পড়ে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত ছিল রেলও। তাই পদটি তুলে দেওয়া যায় কি না তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে রেল। গত কাল রেলের তরফে একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ওই পদটির কোনও প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই ওই পদে আপাতত নিয়োগ বন্ধ রাখা হচ্ছে। এমনকি, যাঁদের গত ১ জুলাই নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের নিয়োগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রেলের সব জ়োনে কঠোর ভাবে ওই নির্দেশ পালন করতে বলা হচ্ছে। রেলের একটি সূত্রের মতে, কয়েক বছর ধরে ওই পদটি তুলে দেওয়ার কথা ভাবছিল মন্ত্রক। বছর দু-আড়াই আগে রেলের পদস্থ আধিকারিকদের নিজে থেকেই ওই খালাসিদের ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিল রেল বোর্ড। কত জন আধিকারিক নিজে থেকেই খালাসিদের অব্যাহতি দিয়েছেন, তা এই নির্দেশিকার পরে স্পষ্ট হবে।