বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। ফাইল চিত্র।
ভারতের মাটিতে ফের ধাক্কা খেল চিনের বাণিজ্যিক স্বার্থ। এ বার ধাক্কা এল ভারতীয় রেলের ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেস ট্রেন তৈরির প্রকল্পে। ৪৪টি সেমি হাই স্পিড ট্রেন তৈরির জন্য ডাকা টেন্ডার বাতিলের কথা শুক্রবার রাতে জানানো হয়েছে রেলমন্ত্রকের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডল থেকে। জানা গিয়েছে, বাতিল হওয়া টেন্ডারের দৌড়়ে এগিয়ে ছিল একটি চিনা সংস্থা। এই ট্রেন তৈরির জন্য আগামী সপ্তাহে নতুন টেন্ডার ডাকা হবে, যেখানে মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
শুক্রবার রাতে রেল মন্ত্রকের করা টুইটে লেখা হয়েছে, “৪৪টি সেমি হাই স্পিড ট্রেন (বন্দে ভারত) তৈরির টেন্ডার বাতিল করা হল। এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন টেন্ডার প্রকাশ করা হবে। সেখানে মেক ইন্ডিয়া প্রকল্পকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।”
রেলমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের জেরে বড়সড় ধাক্কা খেল ভারতের মাটিতে চিনা সংস্থার ব্যবসা। ৪৪টি বন্দে ভারত ট্রেন তৈরির টেন্ডারে অংশ নিয়েছিল ছ’টি সংস্থা। তাদের মধ্যে একমাত্র বিদেশি সংস্থা ছিল সিআরআরসি পায়োনিয়ার ইলেকট্রিক (ইন্ডিয়া) প্রাইভেট লিমিটেড। চিনের সংস্থা সিআরআরসি ওনজি ইলেকট্রিক কোম্পানি লিমিটেড ও গুরুগ্রামের পায়োনিয়ার ফিল-মেড প্রাইভেট লিমিটেড যৌথ ভাবে ২০১৫-তে গড়েছিল ওই সংস্থা। তবে এই সংস্থার বেশির ভাগ অংশিদারিত্ব চিনা সংস্থাটিরই। এই চিনা সংস্থা ছাড়াও ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড (ভেল), সাঙ্গুরের ভারত ইন্ডাস্ট্রিজ, নভি মুম্বইয়ের পাওয়ারনেটিক্স ইকুইপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, হায়দরাবাদের মেধা গ্রুপ ও হিমাচল প্রদেশের ইলেক্ট্রোওয়েভ ইলেকট্রনিক প্রাইভেট লিমিটেড টেন্ডারে যোগ দিয়েছিল।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রেল চাইছিল কোনও ভারতীয় সংস্থা এই বরাত পাক। কিন্তু বরাত পাওয়ার দৌড়ে ওই চিনা সংস্থা সুবিধাজনক অবস্থায় আছে দেখে টেন্ডার বাতিল করা হল। চেন্নাইয়ে রেলের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি ১০ জুলাই এই টেন্ডার প্রকাশ করেছিল। ৪৪টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন, যার প্রতিটিতে থাকবে ১৬টি কোচ। সেগুলি তৈরির জন্যই এই টেন্ডার।
আরও পড়ুন: ‘শপিং মল খোলা, শুধু ধর্মে আপত্তি’, প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির
জুনে লাদাখে ভারত ও চিনা সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। লাদাখ সীমান্ত লাল ফৌজের দখলদারি মনোভাবের কড়া জবাব দেওয়া জারি রেখেছে দিল্লি। তার জের এসে পড়েছে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কেও। এর আগে চিন থেকে সোলার প্যানেল-সহ বেশ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। ড্রাগনের আগ্রাসী মনোভাবের পাল্টা দিতে টিকটক-সহ বহু চিনা মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। আসন্ন আইপিএল থেকে সরানো হয়েছে ভিভোর মতো চিনা স্পনসরকে। সেই চিনা বর্জনের তালিকাতে এ বার জুড়ল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস তৈরির টেন্ডারও।
গত বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লি থেকে বারাণসীর মধ্যে বন্দে ভারত ট্রেনের সূচনা করছিলেন। তার পর অক্টোবরে দিল্লি থেকে শ্রী মাতা বৈষ্ণোদেবী কাতরার মধ্যে এই এক্সপ্রেস পরিষেবার উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।