সুরক্ষা ও সময়ে চলার উপরে জোর রেলমন্ত্রীর

ট্রেনের ইঞ্জিনের মধ্যে চালকের কথোপকথন ছাড়াও তাঁর ভিডিয়ো ছবিও ধরা থাকবে ওই ব্ল্যাক বক্সে। রেল সূত্রে খবর, এমন প্রযুক্তির বেশ কিছু ইঞ্জিন বছর খানেক আগে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কসে তৈরি হয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে ওই ইঞ্জিন ব্যবহারও করা হচ্ছে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০২:২৫
Share:

পীযূষ গয়াল।

দ্বিতীয় বার রেলমন্ত্রী হয়ে ‘সুরক্ষা’ এবং ‘সময়ানুবর্তিতা’র উপর জোর দিতে চান পীযূষ গয়াল। বিমানের ধাঁচে সব ট্রেনের ইঞ্জিনে ব্ল্যাকবক্স বসাতে চান তিনি। প্রাথমিক ভাবে ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ৫০০ ইঞ্জিনে ওই প্রযুক্তি চালু করা হবে। পরে আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের সব ইঞ্জিনেই ওই ব্যবস্থা চালু করা হবে।

Advertisement

ট্রেনের ইঞ্জিনের মধ্যে চালকের কথোপকথন ছাড়াও তাঁর ভিডিয়ো ছবিও ধরা থাকবে ওই ব্ল্যাক বক্সে। রেল সূত্রে খবর, এমন প্রযুক্তির বেশ কিছু ইঞ্জিন বছর খানেক আগে চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কসে তৈরি হয়েছে। পরীক্ষামূলক ভাবে ওই ইঞ্জিন ব্যবহারও করা হচ্ছে।

মালবাহী এবং যাত্রী ট্রেনের সময়ানুবর্তিতায় জোর দিতে ইঞ্জিনে জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) বসানোর মাধ্যমে চলন্ত ট্রেনের অবস্থান জানার ব্যবস্থা করতে চায় রেল। দুর্ঘটনা কমাতে লেভেল ক্রসিং তুলে দেওয়ার পাশাপাশি রেললাইন এবং সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের কাজ শেষ করাও রেলমন্ত্রীর অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে।

Advertisement

রাজধানী বা দুরন্তের মতো প্রথম শ্রেণির ট্রেনগুলির যাতায়াতের সময় কমাতে পুশ-পুল সার্ভিস চালু করতে চায় রেল। ওই ব্যবস্থায় ট্রেনের সামনে এবং পিছনে একটি ইঞ্জিন জুড়ে ট্রেন চালানো হবে। নয়াদিল্লি-মুম্বই রাজধানী এক্সপ্রেসে ওই ব্যবস্থা করে ইতিমধ্যেই ট্রেনটির যাতায়াতের সময় প্রায় দেড় ঘণ্টা কমানো গিয়েছে। আগামী দিনে সারা দেশেই ওই ব্যবস্থা চালু করতে প্রয়োজনীয় তৎপরতা শুরু হয়েছে। বেশির ভাগ দূরপাল্লার ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিমি থেকে বাড়িয়ে ১৬০ কিমি নিয়ে যেতে চায় রেলমন্ত্রী। ২০২০ সালের মধ্যে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাঁচে ১০০টি আধুনিক ‘ট্রেন সেট’ যাত্রী পরিষেবায় লাগাতে চান তিনি।

পচনশীল পণ্য পরিবহণের ট্রেন যাতে নির্দিষ্ট সময় মেনে চলে তা নিশ্চিত করতেও চান রেলমন্ত্রী। এর জন্য মালবাহী ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিমি থেকে ১০০ কিমিতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রেল মন্ত্রক।

‘ওয়ে‌স্টার্ন ফ্রেট করিডর’ এবং ইষ্টার্ন ফ্রেট করিডর’ দ্রুত চালু করার পাশাপাশি হাওড়া-মুম্বাই, নয়াদিল্লি-চেন্নাই, এবং খড়গপুর-বিজয়ওয়াড়ার মধ্যে নতুন ফ্রেট করিডর তৈরির বিষয়ে প্রয়োজনীয় সমীক্ষার কাজও রেলমন্ত্রক দ্রুত শেষ করতে চায়। এ ছাড়াও ট্রেনের সব কামরায় সিসিটিভি ক্যামেরা এবং সব স্টেশনে ওয়াইফাই চালু করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন।

তবে, আয় বাড়ানো নিয়ে আগামী দিনে চাপ থেকেই যাবে রেলমন্ত্রীর উপরে। আয়-ব্যায়ের সূচকের স্বাস্থ্য ফেরাতে গত আর্থিক বছরে বেশ কিছু কৌশল নিয়েছিল রেল। তার মধ্যে প্রধান পণ্যপরিবহণকারী সংস্থার কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ বিপুল টাকা আদায় ছাড়াও অর্থবর্ষের শেষ দু'দিনে যাবতীয় বিল মেটানো বন্ধও রাখা হয়েছিল। ফলে ফের দায়িত্ব নিলেও বাড়তি কয়েক হাজার কোটি টাকার দায় রেলমন্ত্রীর উপরেই বর্তাবে। আয় বাড়াতে রেলের জমি এবং স্টেশন ভাড়া দেওয়া, বেসরকারি উদ্যোগে মালগাড়ি চালানো চালানোর পরিকল্পনা আগেই ছিল। এবার বেসরকারি উদ্যোগে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর বিষয়টিও ভাবনা-চিন্তায় আনতে চান রেলমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement