রবিবার সকাল ১০টায় রাহুল গান্ধীর বাড়িতে যায় দিল্লি পুলিশের একটি দল। ছবি পিটিআই।
তাঁর বাড়িতে দিল্লি পুলিশের অভিযানকে ‘অভূতপূর্ব’ বলে বর্ণনা করলেন রাহুল গান্ধী। একই সঙ্গে অমিত শাহের অধীনস্থ পুলিশের কাছে কংগ্রেস সাংসদের প্রশ্ন, আদানিকাণ্ডে সংসদের ভিতর এবং বাইরে যে ভাবে তিনি সরব হয়েছিলেন, তারই কি ‘বদলা’ এই অভিযান?
গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন রাহুল। সেই পদযাত্রা শেষ হয় গত ৩০ জানুয়ারি। শ্রীনগরে এই কর্মসূচিতেই রাহুল বলেছিলেন, ‘‘শুনেছি, মহিলারা এখনও যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছেন।’’ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতির এই মন্তব্যের ভিত্তিতেই রবিবার সকাল ১০টায় দিল্লিতে ১২, তুঘলক রোডে রাহুলের বাড়িতে গিয়েছিল দিল্লি পুলিশের একটি দল। সেই দলের নেতৃত্বে ছিলেন বিশেষ কমিশনার (আইনশৃঙ্খলা) সাগরপ্রীত হুদা।
পুলিশের দাবি, নারী নির্যাতনের অভিযোগ গুরুতর। তাই কোনও নির্যাতিতার সম্পর্কে রাহুলের কাছে তথ্য থাকলে তা জানান তিনি। সে ক্ষেত্রে নির্যাতিতাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে এবং তদন্ত শুরু করা হবে। সেই তথ্য জোগাড় করতেই রাহুলের বাড়িতে রবিবার যায় পুলিশের দল। সূত্রের খবর, সকাল ১০টায় সেখানে গেলেও তার ২ ঘণ্টা পর রাহুলের সাক্ষাৎ পান পুলিশ কর্মীরা। পরে দুপুর ১টা নাগাদ সেখান থেকে চলে যান তাঁরা। রাহুলের বাড়িতে দিল্লি পুলিশ যাওয়ার খবর ঘিরে রবিবাসরীয় রাজধানীতে শোরগোল পড়ে যায়। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শেষ হয়েছে ৩০ জানুয়ারি। এত দিন পর কেন এই পদক্ষেপ, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।
এই নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেই দিল্লি পুলিশের নোটিসের ভিত্তিতে ৪ পাতার প্রাথমিক জবাব পাঠিয়েছেন সনিয়া-পুত্র। ১০টি পয়েন্টে পুলিশকে জবাব দিয়েছেন রাহুল। পুলিশের এই পদক্ষেপকে ‘অভূতপূর্ব’ বলে বর্ণনা করেছেন। সেই সঙ্গে আদানিকাণ্ডে সরব হওয়ার কারণেই এই পদক্ষেপ করা হল কি না, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংসদ। কেন্দ্রের শাসকদল কিংবা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নিয়ে এ ভাবে তথ্য যাচাইয়ের ঘটনা আর ঘটেছে কি না সেই নিয়েও সরব হয়েছেন রাহুল। তাঁর মন্তব্যের ভিত্তিতে দিল্লি পুলিশ যে প্রশ্নমালা পাঠিয়েছে, তার বিস্তারিত জবাব দিতে রাহুল ৮-১০ দিন সময় চেয়েছেন বলে খবর।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাহুলের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ সফল হয়েছে বলে মত কংগ্রেস নেতাদের। এই কর্মসূচির পর আদানিকাণ্ডে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন রাহুল। পাল্টা একাধিক কর্মসূচিতে কংগ্রেসকে বিঁধতে দেখা গিয়েছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এই আবহে রাহুলের বাড়িতে দিল্লি পুলিশের যাওয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, পুরোটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।