‘ভারত বাঁচাও’ সভায় রাহুল গাঁধী। দিল্লির রামলীলা ময়দানে। ছবি: পিটিআই।
তিরিশ ফুট উঁচু রাহুল গাঁধীর কাটআউটের পিছন থেকেই ওড়ানো হল সারি সারি কালো বেলুন। নরেন্দ্র মোদীর ‘অগুনতি ব্যর্থতা’র প্রতীক হিসেবে। মঞ্চ থেকে ঘোষণা হল, যদি এই বেলুন কোনও ভাবে পৌঁছয় মোদীর কাছে, জানবেন তাঁর কীর্তি। পাশের মঞ্চে গান বাজছে, ‘‘রাহুল সঙ্গ চলেগা সারা হিন্দুস্তান/ বনেগা ফির মহান, আপনা হিন্দুস্তান।’’
আগামী দিনে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মুখ রাহুল গাঁধীই। রামলীলা ময়দানের পরতে পরতে সেই বার্তাই আজ সাজিয়ে রাখলেন সনিয়া গাঁধী। যাতে দলের প্রবীণদের কাছে সেটি স্পষ্ট হয়ে যায়।
‘রাহুল গাঁধী জিন্দাবাদ’ লেখা টুপি মাথায়। ভিড়ে থিকথিক ময়দান। মঞ্চের দিক থেকে যত দূর নজর যাচ্ছে, কাটআউটে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা রয়েছেন একটি মাত্র জায়গায়। তা-ও গাঁধী পরিবারের বাকি দুই সদস্যের সঙ্গে। যেখানে সনিয়ার কাটআউটের উচ্চতা বেশি, তার পর রাহুল, শেষে প্রিয়ঙ্কা। গোটা ময়দান জুড়ে সনিয়ার কাটআউট রয়েছে ৫ টি, রাহুলের ৯ টি। যার মধ্যে তিরিশ ফুটের সবথেকে উঁচুটি রাহুলেরই।
আরও পড়ুন: ‘অর্থনীতি নাকি!’ অটল ঘাটে হোঁচট নমোর
সনিয়া-মনমোহন সিংহ-রাহুল গাঁধী। তাঁর থেকে ছ’জন নেতার পরে বসানো হল প্রিয়ঙ্কাকে। নিজের বক্তৃতা শুরু করলেন প্রিয়ঙ্কা, ‘‘রাহুলজি, আমার নেতা।’’ একই কথা বললেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল থেকে গৌরব গগৈ। মনমোহন সিংহও সনিয়ার পাশাপাশি শুধু রাহুলেরই নাম নিলেন। সনিয়াও মনমোহনের পাশাপাশি রাহুলের। একে একে সেই যুব নেতাদেরই বলতে দেওয়া হল, যাঁরা রাহুলের সময়ে দলে পদ পেয়েছেন। খোলাখুলি রাহুলকে ফিরে আসার আবেদন জানালেন তাঁরা। সচিন পাইলট, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ারাও বললেন।
কিন্তু ভিড় যেন আজ রাহুলের কথাই শুনতে এসেছিল। অন্য নেতা আসছেন, আওয়াজ উঠছে, রাহুল-রাহুল-রাহুল। মঞ্চ থেকেই ইশারায় রাহুল বলছেন, ‘‘হবে হবে।’’ অবশেষে রাহুল যখন বলতে উঠলেন, মঞ্চে দাঁড়ালেন নেতারা। উঠে দাঁড়ালেন না হাতে গোনা ক’জন। যেমন আহমেদ পটেল, অশোক গহলৌত বা পি চিদম্বরম। গহলৌত আবার রাহুলকে কৌশলী খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘‘রাফাল, বেকারি নিয়ে রাহুল গাঁধীই গোড়া থেকে সরব হয়েছেন। ভোটে হেরে গিয়েছি, সে অন্য কথা। বিষয়গুলি জীবিত।’’
বক্তৃতায় নিজের পুরনো ঝাঁঝ ফিরিয়ে দিলেন রাহুল। পরতে পরতে বিঁধলেন মোদীকে। বুঝিয়ে দিলেন, লড়াইয়ে তিনিও তৈরি। কিন্তু কবে? দলের এক নেতা বলছেন, ‘‘বুড়োদের মুখ ভার দেখছেন না? একটু ধাতস্থ হলে তো! সামনের বছর গড়াতে পারে। প্রক্রিয়া দৌড়চ্ছে।’’
রাহুল বক্তৃতা শেষ করলেন, ভিড়ও পাতলা হতে শুরু করল। সনিয়া তখনও বলে চলেছেন।