পাশে: এক কংগ্রেস সমর্থকের সঙ্গে রাহুল গাঁধী। অমেঠীতে বুধবার। ছবি: পিটিআই।
এই প্রথম খালি হাতে ফিরিয়েছে ‘ঘরের মাঠ’। লোকসভা ভোটের ফল বেরোনো ইস্তক কংগ্রেসের সেই ‘গড়’— উত্তরপ্রদেশের অমেঠীতে পা রাখেননি রাহুল গাঁধী। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল বিস্তর। সে সবেরই অবসান ঘটিয়ে আজ অমেঠী গেলেন রাহুল। স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীদের বললেন, অমেঠীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা ব্যক্তিগত। হয়তো তিনি আর এখানকার সাংসদ নন, কিন্তু অমেঠী ছেড়ে যাবেন না কখনও। যে কোনও দরকারে পাওয়া যাবে তাঁকে। সে রাত হোক বা ভোর ৪টে। টুইটারেও রাহুল লিখেছেন, ‘অমেঠী মানে ঘরে ফেরা।’
জেলা সদর গৌরীগঞ্জে কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে আজ ঘণ্টাখানেক পর্যালোচনা-বৈঠক করেছেন রাহুল। স্থানীয় সূত্রের দাবি, সেই সভায় ১২০০ জন আমন্ত্রিত থাকলেও অঝোর বৃষ্টি পেরিয়ে হাজির হয়েছিলেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। কর্মীদের রাহুল বলেন, ‘‘কখনও ভাববেন না, আমি আপনাদের কেউ নই। ওয়েনাড (তাঁর বর্তমান লোকসভা কেন্দ্র)-কে সময় দিতে হবে। কিন্তু আমি আপনাদেরও সময় দেব। আমি ১৫ বছর অমেঠীর সাংসদ ছিলাম। বহু পুরনো, ভালবাসার বন্ধন এখানকার সঙ্গে।’’
গৌরীগঞ্জে পৌঁছে প্রথমে তিলোই বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মাতাপ্রসাদ বৈশ্যের বাড়ি যান রাহুল। সদ্য এক আত্মীয়কে হারানো ওই নেতার পরিবারকে সমবেদনা জানানোর পরে স্থানীয় নির্মলা দেবী বিদ্যালয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে যোগ দেন তিনি। অমেঠী লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সলোন, অমেঠী, গৌরীগঞ্জ, জগদীশপুর ও তিলোই বিধানসভা কেন্দ্রের বুথ সভাপতিদের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। সকলকে লড়াইয়ের জন্য তৈরি হতে বলেন রাহুল। অনেকে ছবিও তোলেন রাহুলের সঙ্গে।
সফরে অবশ্য অস্বস্তিও রইল। সঞ্জয় গাঁধী স্মৃতি ট্রাস্ট পরিচালিত অমেঠীর হাসপাতালে ‘বিনা চিকিৎসায়’ জনৈক রোগীর মৃত্যুর জন্য সুবিচার চেয়ে পোস্টার পড়ল স্থানীয় কংগ্রেস অফিসের বাইরে। অভিযোগ, ননহে লাল নামে ওই রোগীর কাছে এনডিএ সরকারের দেওয়া ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কার্ড থাকায় গত এপ্রিলে তাঁর চিকিৎসাই করতে চায়নি হাসপাতাল। আজকের পোস্টারে ট্রাস্টের সদস্য হিসেবে রাহুলের জবাব চাওয়া হয়েছে। পোস্টারের প্রচারক হিসেবে কারও নাম না-থাকলেও কংগ্রেসের দাবি, এটি বিজেপিরই কাজ।
জনা পঞ্চাশ কংগ্রেস কর্মী আজ অভিযোগ করেন, বৃষ্টির জন্য দেরিতে আসায় রাহুলের সভায় তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই এসেছিলেন ৬৮ বছরের প্রাক্তন গ্রামপ্রধান গঙ্গা প্রসাদ। বললেন, ‘‘অমেঠীতে দলকে চাঙ্গা করতে হলে নেতাগিরি করা লোকগুলোকে সরিয়ে তৃণমূল স্তরের কর্মী ও গরিব মানুষের কাছে যেতে হবে।’’ বর্তমান সাংসদ স্মৃতি ইরানি যে গত বার হেরে গিয়েও অমেঠীতে পড়ে ছিলেন, সংবাদমাধ্যমকে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন সদ্য কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রৌঢ় কৃষক ভগবান সিংহ।