প্রতীকী ছবি
ইন্দিরা গাঁধীর ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের ৫১-তম বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে ব্যাঙ্কের কর্মীরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্য নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁদের উদ্বেগের কারণ ছিল, সরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে অনাদায়ী ঋণের বোঝা। আজ তাকেই হাতিয়ার করে মোদী সরকারকে নিশানা করলেন ইন্দিরার পৌত্র রাহুল গাঁধী।
রবিবার ছিল ইন্দিরার ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের বর্ষপূর্তি। শনিবারই ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন’ ২,৪২৬টি সংস্থার তালিকা প্রকাশ করে। এই সংস্থাগুলি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ১.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে শোধ করেনি। আজ কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর প্রশ্ন, “২,৪২৬টি সংস্থা মানুষের সঞ্চয়ের ১.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক থেকে লুট করেছে। সরকার কি এই লুটের তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেবে? না কি এদেরও নীরব ও ললিত মোদীর মতো ফেরার হতে দেবে?”
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের তালিকা অনুযায়ী, ২,৪২৬টি সংস্থার মধ্যে ৩৩টি সংস্থার বকেয়া ঋণের পরিমাণ মাথা পিছু ৫০০ কোটি টাকার বেশি। এই ৩৩টি সংস্থার কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মোট অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ৩২,৭৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে মেহুল চোকসির গীতাঞ্জলি জেমস (৪,৬৪৪ কোটি টাকা), গিলি ইন্ডিয়া (১,৪৭৭ কোটি টাকা), উইনসাম ডায়মন্ডস (২,৯১৮ কোটি টাকা), নক্ষত্র ব্র্যান্ডস (১,১০৯ কোটি টাকা) রয়েছে। অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ সবথেকে বেশি, ৪৩,৮৮৭ কোটি টাকা রয়েছে স্টেট ব্যাঙ্কের খাতায়।
অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সি এইচ বেঙ্কটাচালামের মতে, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের থেকে বকেয়া আদায় করার একমাত্র উপায় অধ্যাদেশ জারি করা। দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়ায় না গিয়ে বিশেষ অধ্যাদেশ জারি করে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে উদ্ধার করতে হবে। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের অধিকাংশই নামজাদা সংস্থা। তাদের যথেষ্ট আর্থিক ক্ষমতা থাকলেও তারা ঋণ শোধ করছে না। তার জন্য ব্যাঙ্ক কেন খেসারত দেবে! অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কোনও সংস্থা একটি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করছে না। কিন্তু অন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাচ্ছে।
শনিবারই তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন এ নিয়ে মোদী সরকারের সমালোচনা করেছিলেন। আজ সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “মোদীর শিল্পপতি বন্ধুদের লুট চলতে দেওয়া যায় না। এদের এখনই গ্রেফতার করা উচিত।”