PM Narendra Modi-Rahul Gandhi

বুকপকেটে ধর্মের ব্যাজ, মোদীকে কটাক্ষ রাহুলের

মল্লিকার্জুন খড়্গে, সনিয়া গান্ধী, অধীর চৌধুরীরা প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে না-যাওয়ার সিদ্ধান্ত এবং কারণ জানানোর বিবৃতিতে বিজেপির এই রাজনীতিরই উল্লেখ করেছিলেন।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

কোহিমা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৪১
Share:

(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বিজেপি-আরএসএস মিলে ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠাকে পুরোপুরি ‘নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক অনুষ্ঠান’-এ পরিণত করে ফেলেছে বলে অভিযোগ তুললেন রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, সেই কারণেই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, সনিয়া গান্ধীরা ২২ জানুয়ারির অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement

অযোধ্যা থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে নাগাল্যান্ডের কোহিমা জেলার চিয়েচামা-তে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’-র ফাঁকে আজ রাহুল বলেছেন, “ধর্ম যাঁর যাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। নরেন্দ্র মোদীকে কেন্দ্র করে অযোধ্যায় রামমন্দিরের অনুষ্ঠানকেও আরএসএস-বিজেপি মিলে নির্বাচনী অনুষ্ঠানে পরিণত করেছে।” সরাসরি মোদীর নাম না করলেও তাঁর কটাক্ষ, যে শার্টের বুকপকেটে ব্যাজের মতো ধর্মকে ঝুলিয়ে রাখে, সে ধর্ম থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চায়।

মল্লিকার্জুন খড়্গে, সনিয়া গান্ধী, অধীর চৌধুরীরা প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে না-যাওয়ার সিদ্ধান্ত এবং কারণ জানানোর বিবৃতিতে বিজেপির এই রাজনীতিরই উল্লেখ করেছিলেন। তারপর বিজেপি-আরএসএস শিবির গান্ধী পরিবার তথা কংগ্রেসকে সনাতন হিন্দু ধর্ম বিরোধী বলে দাগিয়ে দিতে চাইছে। আজ চিয়েচামা গ্রামের খোলা ময়দানে বসে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল এ নিয়ে প্রথম মুখ খুলেছেন। নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি-আরএসএস নেতৃত্বকে নাম না করে পাল্টা আক্রমণ করেছেন। রাহুল বলেছেন, “যে ধর্মের ব্যাজ বুকে ঝুলিয়ে রাখে, সে ধর্ম থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করে। আমি ধর্ম থেকে ফায়দা তোলার চেষ্টা করি না।”

Advertisement

মোদীর সঙ্গে নিজের ফারাক বোঝাতে রাহুল বলেছেন, “আমি নিজের জীবনে হিন্দু ধর্মের নীতি মেনে চলি। মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করি। সম্মান করি। কেউ কিছু বললে অহঙ্কারের সঙ্গে কথা বলি না। আমি বিদ্বেষ ছড়াই না। সেটাই আমার কাছে হিন্দু ধর্ম। যে হিন্দু ধর্মের এই নীতি মানে না, তাকেই শার্টের বুক পকেটে ধর্মের ব্যাজ পরে থাকতে হয়।”

রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, কংগ্রেসের বা ইন্ডিয়া-র শরিক দলের যে কেউ যখন খুশি রামমন্দিরের অনুষ্ঠানে যেতে পারেন। কারণ, ধর্ম ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু ২২ জানুয়ারির অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে পরিণত করে ফেলেছে বলেই কংগ্রেস নেতাদের পক্ষে সেখানে যাওয়াসম্ভব হচ্ছে না।

রাহুল এ দিন একই সঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, হিন্দু ধর্মের প্রধান গুরু শঙ্করাচার্যরাই ২২ জানুয়ারির প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরাই বলেছেন, এটা রাজনৈতিক অনুষ্ঠান। প্রসঙ্গত, দু’জন শঙ্করাচার্য প্রশ্ন তুলে বলেছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচনী ফায়দা তুলতেই মন্দিরের কাজ শেষ হওয়ার আগে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেফেলা হচ্ছে। ়

জল্পনা ছিল, রাহুল গান্ধী নিজেও উত্তরপ্রদেশের মধ্যে দিয়ে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ যাওয়ার সময়ে অযোধ্যার মন্দিরে যেতে পারেন। কংগ্রেসের কিছু নেতা রবিবারই সরযূ নদীতে স্নান করে অযোধ্যায় রামলালার অস্থায়ী মন্দিরেপুজো দেওয়ার পরে সেই জল্পনা আরও বেড়েছিল।

রাহুল এ দিন স্পষ্ট করেদিয়েছেন, ২০ মার্চ পর্যন্ত যাত্রা চলাকালীন তাঁর অযোধ্যায় যাওয়ার পরিকল্পনা নেই। তিনি মণিপুর থেকে মুম্বই পর্যন্ত ভারত জোড়ো যাত্রার পূর্ব নির্ধারিত পথ ধরেই চলতে চান। ২২ জানুয়ারি তিনি কোথায় থাকবেন, তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাহুলের উত্তর, “আমি যাত্রার কর্মসূচি অনুযায়ী অসমেই থাকব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement