প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ছে। কারণ তিনি গাড়ি চালানোর সময় ‘রিয়ার-ভিউ মিরর’-এ শুধু পিছনের দিকে দেখছেন।’’
ওড়িশার রেল দুর্ঘটনাকে হাতিয়ার করে এ বার নিউ ইয়র্ক থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন রাহুল গান্ধী। রবিবার নিউ ইয়র্কে প্রবাসী ভারতীয়দের সভায় রাহুল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী ও তাঁর সরকারের মন্ত্রীরা ভবিষ্যতের কথা না বলে শুধু অতীতের কথা বলেন। সব কিছুর জন্য অতীতকে দায়ী করেন। ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে চাইলে সরকারের মন্ত্রীরা বলবেন, কংগ্রেস ৫০ বছর আগে কী করেছিল। পাঠ্যক্রম থেকে পর্যায়-সারণি, বিবর্তনবাদের তত্ত্ব কেন বাদ গেল, তা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে বলা হবে কংগ্রেস ৬০ বছর আগে কী করেছিল। রাহুল বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী এমনই। তিনি ভারতের গাড়ি চালাতে চাইছেন। কিন্তু পিছনের দিকে দেখছেন। বুঝতে পারছেন না কেন গাড়িতে ধাক্কা লাগছে, কেন গাড়ি এগোচ্ছে না। বিজেপি, আরএসএসের এই একই ভাবনা। তাঁরা শুধু অতীতের কথা বলেন। অন্য কাউকে দায়ী করেন। কংগ্রেস আমলে রেল দুর্ঘটনা হলে মন্ত্রীরা দায় নিতেন। ইস্তফা দিতেন। ব্রিটিশদের দায়ী করতেন না।’’
চলতি মাসের শেষে নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরের আগে রাহুল আমেরিকা সফর করে কংগ্রেসের ঝুলিতে প্রবাসী ভারতীয়দের সমর্থন ও চাঁদা, দুই-ই জোগাড় করতে চাইছেন। আধুনিক ভারতে প্রবাসী ভারতীয়দের অবদান উল্লেখ করে রাহুল বলেন, ‘‘আধুনিক ভারতের প্রধান স্থপতি মহাত্মা গান্ধী অনাবাসী ভারতীয় ছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত তৈরি হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। নেহরু, অম্বেডকর, সর্দার বল্লভভাই পটেল, সুভাষচন্দ্র বসু, সকলেই অনাবাসী ভারতীয় ছিলেন। খোলা মনে বহির্বিশ্বকে দেখতেন।’’
স্বাধীনতা আন্দোলনের কান্ডারিদের সবাইকেই রাহুল অনাবাসী ভারতীয়দের তালিকায় ফেলে দেওয়ায় তা নিয়ে বিজেপি কটাক্ষও করেছে। রাহুল বিজেপি-আরএসএসের মতাদর্শকে নিশানা করে বলেছেন, ভারতে এখন দু’টি মতাদর্শের লড়াই চলছে। একটি মহাত্মা গান্ধীর, অন্যটি নাথুরাম গডসের। রাহুল অনাবাসী ভারতীয়দের বলেন, ‘‘আই লাভ অল অব ইউ।’’ তার পরেই বলেন, বিজেপির সভায় এই ভালবাসার কথা শোনা যায় না। কংগ্রেসের লোকেরাই একে অন্যকে ‘আই লাভ ইউ ব্রাদার’ বলে।এটাই ভারত। ঘৃণার বাজারে মহব্বতের দোকান।
বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা আজ দিল্লিতে রাহুলকে নিশানা করে বলেছেন, কংগ্রেস ‘মহব্বতের দোকান’-এর বদলে ‘ঘৃণার মেগা শপিং মল’ খুলেছে। নড্ডা বলেন, ‘‘ভারত নতুন কীর্তি স্থাপন করলে কংগ্রেসের যুবরাজ তা হজম করতে পারেন না। ওরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্ন তোলে, হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের কথা বলে। অথচ মুখে মহব্বতের দোকানের কথা বলে।’’