মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ রাহুলের। —ফাইল চিত্র।
গণপিটুনি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ায় দেশের ৫০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা দায়ের হয়েছে। তা নিয়ে এ বার কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। মোদী সরকারের আমলে দেশে স্বৈরতন্ত্র কায়েম হতে চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘দেশে স্বৈরতন্ত্র চলছে। প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই জেলে পুরে দেওয়া হচ্ছে.’’
বন্দিপুর অভয়ারণ্যের মধ্যে দিয়ে চলে যাওয়া ৬৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে যান চলাচল নিষিদ্ধ করা নিয়ে এখন তেতে রয়েছে কর্নাটক। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে এই মুহূর্তে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ওয়েনাডেই রয়েছেন রাহুল গাঁধী। সেখানে ওই ৫০ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে এফআইআর দায়ের প্রসঙ্গে রাহুল বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে দেশে কী চলছে, সে ব্যাপারে প্রত্যেকেই অবগত। কোনও গোপনীয়তা নেই। এমনকি গোটা বিশ্বও জেনে গিয়েছে। ক্রমশ স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছি আমরা।’’
মোদী সরকার সমালোচনা শুনতে পারে না বলেও এ দিন অভিযোগ করেন রাহুল। তাঁর দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু বললে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুললে, আজকাল জেলে পুরে দেওয়া হয়। পড়তে হয় হামলার মুখেও। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সংবাদমাধ্যমকেও।’’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠির জের! সৌমিত্র, অপর্ণা-সহ বিশিষ্টদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ
রাহুল আরও বলেন, ‘‘এক দিকে ধারণা জন্মেছে যে, এক ব্যক্তি-ই দেশ শাসন করবেন। দেশে একটি মাত্র আদর্শই থাকবে। বাকিদের মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে হবে। আর অন্য দিকে বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি এবং বাক স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। দেশে এখন এই যুদ্ধই চলছে।’’
আরও পড়ুন: ‘বড় ভুল’, বাদগামে নিজেদের হেলিকপ্টারে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া নিয়ে মন্তব্য বায়ুসেনা প্রধানের
দেশ জুড়ে ক্রমবর্ধমান গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, চিত্র পরিচালক মণিরত্নম, অনুরাগ কাশ্যপ, শ্যাম বেনাগাল, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী অপর্ণা সেন-সহ মোট ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তাতে বলা হয়, মুসলিম, দলিত এবং সংখ্যালঘুদের এ ভাবে পিটিয়ে মারার ঘটনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ভিন্নমত থাকাটাও স্বাভাবিক বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন তাঁরা। তা নিয়েই বৃহস্পতিবার বিহারের মুজফ্ফরপুরে তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়।