রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন নয়, সনিয়া গান্ধী আপাতত ২০২৩-এ ১০ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বেশি চিন্তিত।
সূত্রের খবর, কংগ্রেস সংসদীয় দলের সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী সম্প্রতি দলের সেনাপতিদের জানিয়েছেন, এক সঙ্গে সব ক’টি ধাপ নয়, লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে একটি একটি করে সিঁড়ি টপকে। সর্বশক্তি দিয়ে তেইশের বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে ঝাঁপাতে হবে। বিধানসভা ভোটে সাফল্য এলে আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের লড়াই সহজ হয়ে যাবে। একই ভাবে তিনি কংগ্রেস নেতাদের এই বলেও সতর্ক করেছেন, এর উল্টোটাও সত্যি। অর্থাৎ যদি রাজ্যে রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে কংগ্রেস, তা হলে বিজেপিকে কার্যত ‘ওয়াক ওভার’ দেওয়া হবে। কর্নাটক জয় নিয়ে কংগ্রেস যথেষ্ট আশাবাদী হলেও, রাজস্থানই সনিয়ার বড় মাথাব্যথা।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শেষ করে ফেরার পরে রাহুল গান্ধী এ বার চাইছেন, দ্রুত রাজস্থানে নেতৃত্বের জট নিয়ে সিদ্ধান্ত হোক। সনিয়াও তাই চান। অশোক গহলৌত বনাম সচিন পাইলটের বিবাদ নিয়ে আগামী সপ্তাহের মধ্যে স্পষ্ট সিদ্ধান্তে আসতে চান কংগ্রেস নেতৃত্ব। আগামী এক মাস রাজস্থান দলের অন্দরের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে কংগ্রেস নেতাদের দাবি।
সনিয়া নিজে কংগ্রেস সভানেত্রীর পদ ছাড়ার পরে গহলৌতকে সভাপতি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পাইলটকে রাজস্থানের রাশ ছাড়তে চাননি। রাহুল-প্রিয়ঙ্কার কাছে বার বার দরবার করেও ফল না মেলায় হতাশ সচিন নিজেই প্রচারে নেমে পড়েছেন। বছরের শেষে ভোটের নেতৃত্ব কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে এখনই স্পষ্ট সিদ্ধান্ত না নিলে পঞ্জাবের মতো পরিস্থিতি হতে পারে বলে কংগ্রেস নেতাদের আশঙ্কা।
কংগ্রেস নেতাদের মতে, কর্নাটকেও ডি কে শিবকুমার ও সিদ্ধারামাইয়ার বিবাদ থাকলেও তা রাজ্যের নির্বাচনে সমস্যা হবে না। কর্নাটকে জিততে পারলে লোকসভা ভোটে লড়াইয়ের আর্থিক রসদও মিলবে। কিন্তু সনিয়া এ নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে নারাজ।
সনিয়ার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, রাহুল যে ক’দিন কাশ্মীরে ছিলেন, চূড়ান্ত উদ্বেগে কাটিয়েছেন তাঁর মা। ঘনিষ্ঠ শিবিরে তিনি এ কথাও জানিয়েছেন, তাঁকে জীবনে এত বার ‘খারাপ ফোন’ ধরতে হয়েছে যে আশঙ্কা, ত্রাস এগুলি সময় এবং পরিস্থিতি বিশেষে তাঁর বেড়েই যায়। তাৎপর্যপূর্ণ হল, রাহুল নিজেও শ্রীনগরের সভায় টেলিফোনে খারাপ খবর আসার কথা বলেছিলেন। হাতের মোবাইল দেখিয়ে বলেছিলেন, তাঁদের পরিবারে এটা শুধু ফোন নয়। এই ফোনে যখন মৃত্যু সংবাদ আসে, তখন কেমন লাগে, সেটা তিনি বা প্রিয়ঙ্কা বোঝেন। কারণ ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার খবর তিনি স্কুলে বসে টেলিফোনে পেয়েছিলেন। বাবা রাজীব গান্ধীর মৃত্যু সংবাদও আমেরিকায় বসে টেলিফোনে জানতে পেরেছিলেন।
কাশ্মীরে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-র সময়ে রাহুলের উপরে হামলার আশঙ্কা নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী তাঁকে সতর্ক করেছিল। ছেলে নিরাপদে দিল্লি ফিরে আসার পর সনিয়া চাপমুক্ত। তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সনিয়া বলেছেন, ‘এখন’ তিনি ছেলের জন্য খুবই গর্বিত।