রাহুল, সুখেন্দুশেখর এবং স্বামী। ফাইল চিত্র।
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নজরদারি চালাতে যে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হয়, নরেন্দ্র মোদী সরকার তা সাহায্যে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক নেতা আর সাংবাদিকদের ফোনে আড়ি পেতেছে বলে আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। শনিবার আমেরিকার সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমেসের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর অভিযোগ— মোদী সরকার দেশ এবং দেশবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
রাহুল টুইটারে লিখেছেন, ‘মোদি সরকার পেগাসাস কিনেছিল দেশের নেতাদের এবং জনসাধারণের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করার উদ্দেশ্যে। তাঁদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে। বিরোধী দল এবং আদালতকে নিশানা করেছে ক্ষমতাসীন দল। এটা দেশদ্রোহ। মোদী সরকার দেশদ্রোহিতা করেছে।’ রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের অভিযোগ, মোদী সরকার দেশের শত্রুর মতো আচরণ করছে।
‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর প্রতিবেদনে শনিবার দাবি করা হয়েছে, ২০১৭ সালে ইজরায়েল থেকে ফোনে আড়ি পাতার স্পাইঅয়্যার ‘পেগাসাস’ কিনেছিল ভারত। সে বছর জুলাইয়ে মোদীর ইজরায়েল সফরের সময়ই এ সংক্রান্ত ‘প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি’ সই হয়েছিল। যদিও সংসদ এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে এ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তার ‘যুক্তি’ দিয়ে জবাব এড়িয়ে গিয়েছিল কেন্দ্র। তার পরেই পেগাসাস বিতর্কে সুর চড়িয়েছে বিরোধী দলগুলি,
তৃণমূলের রাজ্যসভার উপদলনেতা সুখেন্দুশেখর রায় শনিবার বলেন, ‘‘আমার ধারণা, নিউ ইয়র্ক টাইমসে যে খবর বেরিয়েছে, তা সত্য। যখন বিষয়টি নিয়ে সংসদে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে চেপে ধরেছিলাম, তখন কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী এ বিষয়ে কোনও রকমে, দায়সার বিবৃতি দিয়ে ধামাচাপা দিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার মনে হচ্ছে মন্ত্রী সংসদে সত্য বলেননি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে সংসদে প্রস্তাব আনা যায় কিনা, তা নিয়ে দলের সংসদীয় কমিটি আলোচনা করবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির রিপোর্ট দেখেছি। ২০১৭ সালে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ এতটাই বেশি ছিল যে এখন পেগাসাস নিয়ে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ সত্য বলেই মনে হচ্ছে।’’
রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম পেগাসাস প্রসঙ্গে আমেরিকার সংবাদপত্রের রিপোর্ট সম্পর্কে বলেন, ‘‘পেগাসাস নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বড়সড় বিপদে পড়তে চলছে। একটি সরকার দেশের কাজ না করে বিরোধীদের ফোনে আড়ি পাতছে। এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা।’’
বিরোধীদের পাশাপাশি তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পেগাসাস প্রসঙ্গে মোদী সরকারকে নিশানা করেন বিজেপি-র রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রহ্ম্যণম স্বামী। তাঁর টুইট, ‘প্রাথমিক ভাবে বোঝা যাচ্ছে, আমাদের সরকার সুপ্রিম কোর্ট এবং সংসদকে বিভ্রান্ত করেছে। ওয়াটারগেট?’ স্বামীর দাবি, নিউ ইয়র্ক টাইমেসের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে মোদী সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে কেন করদাতাদের টাকার থেকে ৩০০ কোটি দিয়ে ইজরায়েলের এনএসও কোম্পানির থেকে স্পাইঅয়্যার কেনা হয়েছিল।