এই দেখুন ছেঁড়া কুর্তা! সোমবার হৃষীকেশ রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই
ফাটা কুর্তা, নিকলা রাহুল!
নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর কথার লড়াই তো রোজই হয়। কিন্তু ভোটের মরসুমে রাজনীতির চেনা ছকের বাইরে আজ খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলেন অন্য রাহুল গাঁধী। সেই নেতা যিনি একেবারে ভরা হাটে দাঁড়িয়ে সবাইকে দেখিয়ে দিচ্ছেন নিজের ছেঁড়া কুর্তা! এই ‘অন্য’ রাহুলকে নিয়েই এখন শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
ব্যাপারটা কী?
উত্তরাখণ্ডের হৃষীকেশ-এ ভোটের প্রচার। শৈলশহর এখন ঠান্ডায় কাঁপছে। সেই শীতেও সভামঞ্চে পৌঁছে কর্মীদের উৎসাহ দেখে আজ উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন রাহুল। বলেন, ‘‘আপনাদের উৎসাহ দেখে আমার তো গরম লাগতে শুরু করেছে!’ সঙ্গে সঙ্গে নিজের জ্যাকেট খুলে ফেলেন রাহুল। তার পর শুরু হয়ে যায় মোদী সরকার ও সঙ্ঘ পরিবারের দিকে পরের পর নিশানা। হঠাৎই নিজের ছেঁড়া কুর্তা শ্রোতাদের দিকে তুলে ধরেন রাহুল। বলেন, ‘‘এই দেখুন, আমি ছেঁড়া কুর্তা পরেছি। কিন্তু মোদীজি কখনও ছেঁড়া কুর্তা পরেন না। বড়লোকদের সঙ্গেই ওঁর ছবি দেখতে পাওয়া যায়।’’ রাহুলের দাবি, ‘‘আমি গরিবের জন্য রাজনীতি করি। আর এ দেশে সব থেকে পয়সাওয়ালা যাঁরা, তাঁদের সঙ্গেই মোদীজিকে দেখা যায়।’’
অতীতে মোদী সরকারকে ‘স্যুট-বুটের সরকার’ আখ্যা দিয়ে তোপ দেগেছেন রাহুল। কিন্তু তখনও শরীরী ভাষা এতটা আক্রমণাত্মক ছিল না। কিন্তু উত্তরাখণ্ড আজ দেখল অন্য রাহুলকে। যিনি প্রতিপক্ষ শিবিরে ধস নামাতে রাজনীতির কথার বাইরে শরীরী ভাষার ব্যবহারও জানেন।
তাই উত্তরাখণ্ডের কুর্তা-কাহিনি সাড়া ফেলেছে দিল্লিতেও। কংগ্রেস মহলে একটাই কথা— এ তো ‘ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো’-র দ্বিতীয় পর্ব। ফাটা কুর্তা, নিকলা রাহুল! আর বিজেপি নেতারা বলছেন, ‘‘দেখাবেন বলেই আজ ছেঁড়া কুর্তা পরে পাহাড়ে গিয়েছিলেন যুবরাজ। একটু একটু করে ওঁর যে রাজনীতির জ্ঞান হচ্ছে, তাতে আমরাও খুশি!’’
শুধু নিজের কুর্তা দেখিয়ে দেওয়াই নয়, আজ শুরু থেকেই মোদীকে কটাক্ষ করতে থাকেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি। যোগ-প্রিয় মোদীকে নিয়ে বলেন, ‘‘কংগ্রেস সমাজের বিভাজন করে না। বিজেপিই সেটা করে। মোদীজি, আপনার উচিত অন্তত কিছু ক্ষণের জন্য তপস্যায় বসা। কিছুটা যোগাভ্যাসও করতে পারেন!’’ নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত এক তরফা ভাবে নিয়ে মোদী রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো প্রতিষ্ঠানকে খাদের ধারে নিয়ে এসেছেন বলেও অভিযোগ আনেন তিনি।
গাঁধী হত্যায় সঙ্ঘকে জড়িয়ে কিছু দিন আগেই মানহানির মামলায় জড়িয়েছেন রাহুল। তবে এ দিন সঙ্ঘের বিরুদ্ধে ফের তোপ দাগেন তিনি। বলেন, ‘‘১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৫২ বছর ধরে নাগপুরে আরএসএসের সদর দফতরে তেরঙা ঝান্ডা ওড়েনি। আর এরাই এখন দেশ ভক্তির কথা বলছে।’’