রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র।
সোমবার সকাল থেকেই রাহুল গাঁধী দশ জনপথে। সনিয়া-রাহুল মিলে একের পর এক বৈঠক করছেন। প্রথমে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে বৈঠক হল। তার পরে কেরলের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হল, কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী না-করেই পিনারাই বিজয়নের বাম জোটের বিরুদ্ধে মাঠে নামা হবে। চলতি সপ্তাহের শেষে রাহুল আবার ভোটমুখী তামিলনাড়ুতে যেতে পারেন বলেও খবর।
ইটালি থেকে ফেরার পরে রাহুল ফের দলের কাজকর্ম নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠলেও, তিনি সভাপতির পদে ফিরছেন কি না, এখনও সেই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। কংগ্রেসের ২৩ জন ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা সক্রিয় নেতৃত্ব দাবি করে সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখেছিলেন। গত ১৯ ডিসেম্বর বিক্ষুব্ধদের সিংহ ভাগ নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন সনিয়া। অন্যতম ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা কপিল সিব্বল আজ ফের প্রশ্ন তুলেছেন, কবে সভাপতি পদে নির্বাচন হবে? তাঁরা যে সভাপতি পদের সঙ্গে দলের ওয়ার্কিং কমিটি, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটিতেও নির্বাচন চাইছেন, তা-ও সিব্বল মনে করিয়ে দিয়েছেন। মনমোহন সরকারের মন্ত্রী
সিব্বলের যুক্তি, কংগ্রেসের সংবিধান অনুযায়ী, সভাপতি পদের সঙ্গেই ওয়ার্কিং কমিটির নির্বাচন হয়। ‘টিম রাহুল’-এর নেতাদের পাল্টা যুক্তি, সভাপতি পদে নির্বাচন হবে আগেই ঠিক হয়েছে। গোটা দলই চায়, তিনি সভাপতি পদের দায়িত্ব নিন। সিব্বলের মন্তব্য সম্পর্কে দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অনিল চৌধরি বলেন, “উনি বার বার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে কেউ এ ভাবে প্রশ্ন তুললে, তাতে পার্টি শক্তিশালী হয় না, দুর্বল হয়।” দায়িত্ব না-নিলেও রাহুল এ দিন সনিয়ার বাসভবনে এসে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বে কংগ্রেস, আরজেডি-র জোট সরকার গত মাসে এক বছর পূর্ণ হয়েছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে মন্ত্রিসভায় নতুন অন্তর্ভুক্তি থেকে রাজ্যের কংগ্রেস বিধায়কদের ক্ষোভবিক্ষোভ নিয়ে আলোচনা হয়। এআইসিসি-তে রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা আর পি এন সিংহও বৈঠকে হাজির ছিলেন।
এর পর ভোটমুখী কেরলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাহুল। এআইসিসি-তে কেরলের ভারপ্রাপ্ত নেতা তারিক আনোয়ার বলেন, “রাহুলের নির্দেশ, গোটা দলকে এককাট্টা হয়ে লড়তে হবে। নির্বাচনে তরুণ, মহিলা, অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে থেকে নতুন মুখ তুলে আনতে হবে।” সম্প্রতি কেরলের পুর ও
পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের ফল ভাল হয়নি। রাহুল এখন কেরলের ওয়ানাডের সাংসদ। ফলে কংগ্রেস নেতৃত্বের রক্তচাপ বেড়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উমেন চান্ডি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মুল্লাপল্লী রামচন্দ্রন ও বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালার মধ্যে বিবাদ চলছে। এই পরিস্থিতিতে ঠিক হয়েছে, কাউকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ না-করেই নির্বাচনে যাবে কংগ্রেসের ইউডিএফ জোট। তারিক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা পরে ঠিক হবে।”