মোদীকে সরাসরি ‘কাপুরুষ’ আখ্যা দিলেন রাহুল। ছবি: সংগৃহীত।
কখনও অর্থনীতির বেহাল দশা, কখনও বেকারত্ব। কখনও আবার লাদাখে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা। অতিমারির সময় থেকেই লাগাতার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক আক্রমণাত্মক তির ছুড়ে চলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। এ বার সেই আক্রমণ আরও তীক্ষ্ণ করে মোদীকে সরাসরি ‘কাপুরুষ’ আখ্যা দিলেন রাহুল। দাবি করলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাপুরুষতার জন্য লাদাখে ভারতের জমি কেড়ে নিতে সক্ষম হয়েছে চিন। শুধু তা-ই নয়, চিনকে হঠাতে দেশের সেনাবাহিনীর ক্ষমতা ও বীরত্বের প্রতি যে মোদীর আস্থা নেই, সেই দাবিও করলেন তিনি। রাহুলের আরও দাবি, মোদীর কাপুরুষতার জন্যই দেশের ভূখণ্ড নিজেদের কব্জায় রেখে দিতে সক্ষম হবে চিন।
পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সংঘর্ষের পর মাস দুয়েক কেটে গেলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি) বরাবর একাধিক জায়গায় ভারতীয় ভূখণ্ড নিজেদের কব্জা থেকে ছাড়েনি চিন। দু’পক্ষের দফায় দফায় সামরিক পর্যায়ের বৈঠকের পরও নিজেদের অবস্থানের অনড় চিন। এই আবহে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে চিনের প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদীর বার্তা নিয়ে প্রভূত কৌতূহল ছিল কূটনৈতিক মহলে। তবে প্রধানমন্ত্রী চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেও নিজের ভাষণে এক বারের জন্য চিনের নামোল্লেখ করেননি। তা নিয়ে গত কালও কংগ্রেসের তোপের মুখে পড়েনি মোদী। গত কাল কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন ছিল, চিনের নামোল্লেখ করতে কি ভয় পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী? রবিবার সেই আক্রমণকে আরও ধারালো করে রাহুলের দাবি, ভারতীয় সেনার ক্ষমতা ও বীরত্বে ভরসা নেই প্রধানমন্ত্রীর।
টুইটারে রাহুল লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্ষমতা এবং বীরত্বের উপর সকলেই আস্থা রয়েছে। যাঁর কাপুরুষতা চিনকে আমাদের ভূখণ্ড কেড়ে নিতে দিয়েছে। যাঁর মিথ্যাচার তা (সেই ভূখণ্ড) কব্জা করে রাখতেও নিশ্চিত করবে।”
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, লাদাখে চিনা আগ্রাসনের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ক্রমাগত আক্রমণ করে তাঁকে ‘দায়বদ্ধ’ প্রতিপন্ন করার কৌশল বজায় রাখার লক্ষ্যেই আক্রমণের সুর এতটা চড়িয়েছে কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে কি? মোদী সরকারকে প্রশ্ন সনিয়ার
আরও পড়ুন: দলাই লামার তথ্য জোগাড় করছিলেন ১০০০ কোটির হাওয়ালা কাণ্ডে ধৃত চিনা নাগরিক?
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুর হিংসায় নিহত আরও ১, পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু?
গত কাল সেই কৌশলের অঙ্গ হিসাবেই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর বার্তাতেও সেই সুর শোনা গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। লাদাখে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক কর্নেল-সহ ২০ জনের প্রতি বার্তা দিয়ে সনিয়া বলেন, “আমাদের ভূখণ্ডে চিনের আক্রমণগুলি বানচাল করে দেওয়ার পাশাপাশি ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করাই হবে ওই সেনাদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধার্ঘ।”