Rahul Gandhi

মোদীর সঙ্গে টক্কর! এ বার নিজের নয়া চ্যানেল খুললেন রাহুল গাঁধী

রাহুলের মতো রাজনৈতিক নেতাদের এ বার কি এই নতুন অবতারেই ঘন ঘন দেখা যাবে?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২০ ১৯:০৫
Share:

সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্তের যুগে কংগ্রেস তথা নিজের মতামত আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন রাহুল। —ফাইল চিত্র।

অর্থনৈতিক সমস্যা হোক বা করোনা-সঙ্কট, দুঁদে সাংবাদিকের মতো বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তা নিয়ে ভিডিয়ো-আলাপচারিতায় দেখা গিয়েছে রাহুল গাঁধীকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টক্করে নিজের ভাবমূর্তিকে নয়া মোড়কে তুলে ধরাই যে রাহুলের প্রধান লক্ষ্য, তা-ও মনে করছেন অনেকে। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে নিজের চ্যানেল খুলে ফেললেন রাহুল গাঁধী। লক্ষ্য, আরও বেশি মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা। বিশেষত, আজকের সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্তের যুগে কংগ্রেস তথা নিজের মতামত, কথোপকথন আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন রাহুল।

Advertisement

এই মুহূর্তে টেলিগ্রামের মতো মেজেসিং অ্যাপের মাধ্যমে দেখা যাবে রাহুলের চ্যানেলটি। এখনও তা ‘ভেরিফায়েড’ না হলেও কিছু দিনের মধ্যেই সে কাজ সেরে নেবে ‘টিম রাহুল’।

লকডাউনের সময় থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। লাদাখ সংঘর্ষের পর তার তীব্রতা আরও বেড়েছে। প্রায় প্রতি দিনই টুইটারে মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন রাহুল। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কংগ্রেস তথা বিরোধী দলগুলির মতামত বা ক্ষোভের পরিসরকে বাড়াতে এবং মূলত তা সংবাদমাধ্যমের আরও কাছে পৌঁছে দিতেই এই চ্যানেল খুলেছেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: পাঁচ রাজ্যে গেল করোনার ওষুধ রেমডেসিভির, কলকাতায় পরের পর্যায়ে

সোশ্যাল মিডিয়ায় অবশ্য রাহুল গাঁধীর যাতায়াত নতুন নয়। তাঁর নিজের টুইটার হ্যান্ডল রয়েছে। সেখানে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ইতিমধ্যে ১ কোটি ৪০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব অ্যাকাউন্ট বা ফেসবুক পেজও। তবে এ ক্ষেত্রে মোদী বা বিজেপি শিবিরের তুলনায় বেশ পিছিয়েই দৌড় শুরু করেছেন এই তরুণ কংগ্রেস নেতা। নিজের প্রথম লোকসভা নির্বাচন থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেষ্ট আনাগোনা রয়েছে মোদীর। পাশাপাশি, প্রতি মাসে যেখানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর রেডিয়ো অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’ নিয়ে শ্রোতাদের কাছে হাজির হন বা নিজস্ব নামো অ্যাপের মাধ্যমে সরকারের নানা কথা জানান, সেখানে এখনও সে রকম নিয়মিত পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি রাহুলকে। তবে এ বার বোধহয় সে ছবিটা পাল্টে ফেলতে চান তিনি। লকডাউনের সময় তাঁকে দেখা গিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন বা অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা শিল্পপতি রাজীব বজাজের সঙ্গে অর্থনীতি থেকে শুরু করে করোনা-যুদ্ধ নিয়ে ভিডিয়ো আলাপচারিতায়। এ বার আরও আগ্রাসী রাহুল।

আরও পড়ুন: লাদাখ ঘুরে এসে রিপোর্ট দিচ্ছেন নরবণে, তার পর স্থির পরবর্তী পদক্ষেপ

তবে কি রাহুলের মতো রাজনৈতিক নেতাদের এ বার এই নতুন অবতারেই ঘন ঘন দেখা যাবে? সোশ্যাল মিডিয়াতে কি তাঁদের বিচরণ আরও সহজ এবং ঘনঘন হবে? রাহুলের এই নতুন চ্যানেল খোলা নিয়েই কী ভাবছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা? দিলীপ চেরিয়ানের মতো রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিস্ট এ বিষয়ে সতর্কবার্তা শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, “এতে আবার বড়সড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিজিটাল মাধ্যমে সহজলভ্য বিষয়গুলি যে একেবার খাঁটি সত্যি কথা, তা নিয়ে কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেন না। তা ছাড়া, এই মাধ্যমে এত তথ্যের সমাহার, যে কিছু মানুষের পক্ষে তা খুঁজে পাওয়াটাও কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে ফলোয়ার রয়েছে এমন মিডিয়ার পক্ষেই মত দেব। যেমন, আপনার যদি টুইটার হ্যান্ডেল বা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থাকে, এবং সেখানে অংসখ্য ফলোয়ার রয়েছে, তখন তাতে একটা দায়িত্ব এসে বর্তায়। আপনি তাতে যা বলবেন, তার দায়িত্ব আপনার কাঁধেই বর্তায়। সেটা ক্ষণস্থায়ী হলেও তার বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়। সবচেয়ে বড় কথা হল, নিজের মিডিয়া থাকলে ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলের উপর ভরসা করতে হয় না। আমরা নামো অ্যাপ দেখেছি। এবং আমার মতে, গাঁধীদের এই চ্যানেলের আইডিয়াটা বেশ ভাল।”

সোশ্যাল মিডিয়ার নানাবিধ ব্যবহারে অবশ্য শুধুমাত্র মোদীই নন, আরও বহু নেতা-নেত্রীরই অবাধ বিচরণ দেখা যাচ্ছে। সে তালিকাটা আরও দীর্ঘ করলেন রাহুল গাঁধী। ফেসবুক, টুইটার ছাড়াও, ইউটিউবেও প্রায়শই রাহুলের নিজস্ব ভিডিয়ো দেখা যায়। মোদীর সঙ্গে টক্কর ছাড়াও রাহুলের নতুন চ্যানেল খোলা নিয়ে আরও একটি জল্পনার জন্ম দিয়েছে। ফের কি কংগ্রেস সভাপতির পদে দেখা যাবে রাহুল গাঁধীকে? সে প্রশ্নের উত্তর আপাতত সময়ের গর্ভে। তবে আপাতত মোদীর সঙ্গে টক্কর যে আরও জোরদার করলেন রাহুল, তা-ই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement