নিবার্চনী সফরে আগামী কাল বরাক উপত্যকায় আসছেন কংগ্রেসের উপ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। করিমগঞ্জের নিলামবাজার ও কাছাড়ের সোনাইয়ে তিনি দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভা করবেন।
শিলচর জেলা কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক পার্থরঞ্জন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আগামী কাল সকাল সাড়ে ১০টায় রাহুল গাঁধীকে নিয়ে বিশেষ বিমান শিলচরের কুম্ভীরগ্রাম বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে তিনি যাবেন কার্বি আংলং জেলার ডিফুতে। বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি সেখানে ভাষণ দেবেন। ১টায় সভা নিলামবাজার এস ভি বিদ্যানিকেতন ময়দানে। আড়াইটেয় পৌঁছবেন সোনাইয়ের কচুদরম খেলার মাঠে। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে কুম্ভীরগ্রাম বিমানবন্দর। বিকেল
৪টেয় শিলচর থেকেই দিল্লি রওনা দেবেন রাহুল। তাঁর নির্বাচনী সভায় ভিড় জমাতে কয়েক দিন ধরেই কংগ্রেসের স্থানীয় কমিটিগুলি কাজ করছিল। তৎপর ছিলেন প্রার্থীরাও। কিন্তু আজ সকাল থেকে বৃষ্টি পড়তে থাকায় চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। শুধু কংগ্রেসই নয়, বৃষ্টি দুশ্চিন্তায় রেখেছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলকেও। বরাকে ভোটের বাকি মাত্র এক সপ্তাহ। তার আগে আজ বৃষ্টির জন্য রুটিনমত কাজ হয়নি। তবে এ দিন কারও জনসভা ছিল না। পাঁচ বছর আগে ঠিক আজকের দিনে মুখভার ছিল আকাশের। বৃষ্টিও পড়ছিল। সেই সময় করিমগঞ্জে প্রচারে আসার কথা ছিল ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীর। পাঁচ বছর পর করিমগঞ্জে আসছেন সনিয়া-তনয় রাহুল। তুমুল বৃষ্টির জন্য সনিয়ার সভা আয়োজন করতে হিমসিম হয়েছিলেন দক্ষিণ করিমগঞ্জের নিলামবাজারের দলীয় নেতা-কর্মীরা। এ দিনও নিলামবাজারে একই ছবি দেখা গেল।
সনিয়ার সফরের মতো রাহুলের প্রচারের আগে বৃষ্টি হওয়ায় সিদ্দেক আহমেদের অনুগামীরা চিন্তিত। তাঁরা বলছেন, সনিয়া গাঁধীর দক্ষিণ করিমগঞ্জ সফরের আগের দিন বৃষ্টি কমে গিয়েছিল। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ ছিল সনিয়ার সভা। প্রবল বৃষ্টির জন্য এক দিন পিছিয়ে ১ এপ্রিল সভা করার চিন্তাভাবনা করা হয়েছিল। কিন্তু ২৯ মার্চের পর থেকেই বৃষ্টি কমে যায়। তাই ১ এপ্রিলের সভায় কোনও সমস্যা হয়নি। এ বার ২৯ মার্চ আসছেন রাহুল গাঁধী। নিলামবাজারের স্বামী বিবেকানন্দ স্কুলের খেলার মাঠে চলছে জোর প্রস্তুতি। মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে জোর কদমে। কিন্তু বৃষ্টিতে গোটা মাঠ কাদায় ভরেছে।
করিমগঞ্জ জেলা কংগ্রেসের প্রশাসনিক সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দেব জানান, রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও। তাঁদের হেলিকপ্টার অবতরণ করতে পারলে নির্বাচনী সভা হবে। রাহুল গাঁধীর বিশেষ নিরাপত্তারক্ষীরা কয়েক দিন থেকেই করিমগঞ্জে রয়েছেন।
গত কাল নরেন্দ্র মোদীর সভার আগে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি। কিন্তু রাহুলের অনুষ্ঠানের আগে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বিজেপি নেতাদের একাংশ বলছেন, এতে বোঝা যাচ্ছে প্রকৃতিও কংগ্রেসের উপর রুষ্ট। কিন্তু দক্ষিণ করিমগঞ্জের কংগ্রেস অবশ্য এ সবে কান দিতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, জনসভার আগে বৃষ্টি শুভ লক্ষণ। ২০১১ সালে সনিয়া গাঁধীর সভার আগেও বৃষ্টি হয়েছিল। সে বার জিতেছিলেন সিদ্দেক। রাহুলের সভার আগেও বৃষ্টি হচ্ছে। তাই এ বারও সিদ্দেকের জয় নিশ্চিত।
গত কাল রাত পর্যন্ত প্রার্থীদের প্রচার ছিল তুঙ্গে। আজ সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হওয়ায় প্রচার থমকে যায়। এ দিনই হাইলাকান্দি বিজেপি দলের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ নিয়ে প্রচার শুরু করে। কিন্তু বৃষ্টিতে রাস্তায় রাস্তায় কাদা জমে যাওয়ায় বিজেপির ভিডিও-ভ্যান গ্রামে গ্রামে ঘুরতে পারেনি। একই অবস্থা কংগ্রেস, এআইইউডিএফ-সহ নির্দল প্রার্থীদেরও। বৃষ্টির জন্য সকলেই এ দিন কার্যত ঘরবন্দি ছিলেন। কয়েক জন অবশ্য গাড়িতে ঘুরেছেন। হাইলাকান্দিতে প্রচার করতে আসবেন বদরউদ্দিন আজমল। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকলে তাতে সমস্যা হবে বলে আশঙ্কায় রয়েছেন ওই দলের নেতারা।