ছবি: পিটিআই।
লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে কতখানি সরব হওয়া উচিত, তা নিয়ে কংগ্রেস নেতাদের অনেকের মনেই সংশয় হওয়া রয়েছে। কিন্তু সেই সংশয় খারিজ করে আজ কংগ্রেসের বৈঠকে রাহুল গাঁধী যুক্তি দিলেন, লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশ নিয়ে সংসদে কংগ্রেসকে সরব হতেই হবে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মোদী নিজের পছন্দের কথাই শুনতে পারেন না। বেকারত্ব, অনুপ্রবেশ, অর্থনীতি—সব সঙ্কট সামনে আসবেই। টাইটানিক এ ভাবেই হিমশৈলে ধাক্কা মেরে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল।’’
সংসদের রণকৌশল তৈরি করতে আজ সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ‘স্ট্র্যাটেজি গ্রুপ’-এর বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই রাহুল বলেন, যখন ভারতীয় সেনার সঙ্গে চিনের সেনার সংঘাত চলছে, তখন সরকার কী ভাবে বলতে পারে যে, কোনও অনুপ্রবেশ হয়নি, কিছুই ঘটেনি! রাহুলের যুক্তি, ‘‘আমাদের এই বিষয়টি নিয়ে সংসদে সরব হতেই হবে।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথমে লাদাখে চিনের সেনা অনুপ্রবেশ হয়নি বলে দাবি করলেও পরে সরকার সেখান থেকে পিছু হঠে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সংসদে লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা ও সরকারের জবাবদিহি দাবি করবে বলে ঠিক হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের যুক্তি, ২০১৭-তেও চিনা অনুপ্রবেশের পরে কংগ্রেস সংসদে আলোচনার দাবি জানায়। কিন্তু মোদী সরকার তা খারিজ করে দিয়েছিল। অথচ ১৯৬২-তে ভারত-চিন যুদ্ধের পরেও সংসদে আলোচনা হয়েছে।
কংগ্রেসের ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতাদের সনিয়াকে চিঠি লেখার পরে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসেছিল। তার পরে ফের আজ গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মার মতো ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতারা সনিয়া-রাহুলের মুখোমুখি বৈঠকে বসেছেন।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আরেক ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা লোকসভার সাংসদ মণীশ তিওয়ারিকেও বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, বৈঠকে সকলেই রাহুলের সঙ্গে একমত হয়েছেন যে, কোভিড পরিস্থিতি, অর্থনীতির সঙ্কট ও লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সংসদে সরব হতে হবে। বিক্ষুব্ধ নেতারাও কংগ্রেসের মারমুখী রণকৌশলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
কংগ্রেসের নেতারা মনে করছেন, কোভিড, অর্থনীতি, লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে প্যাঁচে পড়ে মোদী সরকার নজর ঘোরানোর নানা কৌশল তৈরি করছে। রাহুল এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ও সংবাদমাধ্যম যতই নজর ঘোরানোর চেষ্টা করুক, একটা সময়ের পরে সরকার লুকোতে পারবে না।’’ এখন মোদী সরকার কানে ‘ইয়ার প্লাগ’ গুঁজে বসে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন রাহুল।
সংসদের বাজেট অধিবেশনের পর থেকে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র মোট ১১টি অধ্যাদেশ জারি করেছে। এর মধ্যে কৃষি ক্ষেত্রের সংস্কারের জন্য তিনটি ও ব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের একটি অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস।