Rahul Gandhi

নাগপুরের সভা থেকেই ভোটের প্রচার রাহুলের

তরুণদের ভোট টানতে রাহুল বলেন, গত দশ বছরে নরেন্দ্র মোদী কত জনকে রোজগার দিয়েছেন, কেউ বলতে পারবে না। বেকারত্ব চল্লিশ বছরে সর্বোচ্চ সীমায় উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:৪৫
Share:

রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

‘‘গোটা দেশে আমরা নির্বাচনে জিততে চলেছি।’’

Advertisement

লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে কংগ্রেস আজ দলের ১৩৯-তম প্রতিষ্ঠা দিবসে নাগপুরে প্রথম জনসভা করল। আর সেই জনসভায় রাহুল গান্ধী তাঁর বক্তৃতার শেষে এ ভাবেই জয়ের দাবি করলেন।

নাগপুর থেকে কংগ্রেসের প্রচার শুরু হলেও দলের নেতারা আজ বুঝিয়ে দিলেন, ভোটের আগে কংগ্রেস তথা বিরোধীদের পক্ষে হাওয়া ওঠার আশায় তাঁরা রাহুল গান্ধীর ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’র দিকেই হাপিত্যেশ করে তাকিয়ে রয়েছেন। তাই নাগপুরের জনসভার পরেই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ও রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানেও রাহুলের যাত্রা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ১৪ জানুয়ারি ইম্ফল থেকে রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রার দ্বিতীয় পর্ব, ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’ শুরু হবে। তার আগে যাত্রার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে কংগ্রেস হাইকমান্ড দিল্লিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও পরিষদীয় দলনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

Advertisement

নাগপুরে আরএসএসের সদর দফতর। সেই নাগপুরে কংগ্রেসের জনসভা থেকে রাহুল বলেন, বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে নির্বাচনের লড়াইটা মূলত দুই মতাদর্শের লড়াই। এনডিএ এবং ইন্ডিয়া, দুই জোটেই অনেক দল রয়েছে। যুদ্ধটা মূলত মতাদর্শের। কংগ্রেস যে এই লড়াইয়ের জন্য তৈরি, তা বোঝাতে এ দিন নাগপুরের জনসভার নামকরণ হয়েছিল ‘হ্যায় তৈয়ার হম’।

বিজেপি তথা আরএসএস-কে নিশানা করে আজ রাহুল বলেছেন, বিজেপিতে গোলামি চলে। যেমনটা ব্রিটিশ আমলে, রাজারাজড়াদের সময়ে চলত। স্বাধীনতা আন্দোলন শুধু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ছিল না, রাজারাজড়াদের বিরুদ্ধেও ছিল। কংগ্রেস তার বিরুদ্ধে লড়েছিল। কারণ রাজারাজড়াদের আমলে জনতার কোনও অধিকার ছিল না। সেটাই আরএসএসের মতাদর্শ। কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়ে সাংসদেরা তাঁকে বলেছেন, তাঁদের মন ভাল নেই। কারণ বিজেপিতে উপর থেকে যা নির্দেশ আসে, সেটাই পালন করতে হয়। কংগ্রেসে কোনও সাধারণ কর্মীও তাঁকে প্রশ্ন করতে পারেন। তাঁর কিছু ভাল না লাগলে মুখ খুলে বলতে পারেন। উল্টো দিকে মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলেকে দেখিয়ে রাহুল বলেন, উনি বিজেপিতে থেকে জিএসটি নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন বলে তাঁকে বার করে দেওয়া হয়েছিল।

তরুণদের ভোট টানতে রাহুল বলেন, গত দশ বছরে নরেন্দ্র মোদী কত জনকে রোজগার দিয়েছেন, কেউ বলতে পারবে না। বেকারত্ব চল্লিশ বছরে সর্বোচ্চ সীমায় উঠেছে। সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন মেধা দেখে নয়, নির্দিষ্ট একটি সংগঠন থেকে উপাচার্য নিয়োগ করা হচ্ছে। রাহুল বলেছেন, মহারাষ্ট্র থেকেই কংগ্রেস পথ চলা শুরু করেছিল। তাই তাঁরা মহারাষ্ট্র থেকেই জনসভা শুরু করছেন। এই নাগপুরই বি আর অম্বেডকরের কর্মক্ষেত্র ছিল।

নাগপুরের ‘দীক্ষাভূমি’-তে অম্বেডকর তাঁর দলিত অনুগামীদের নিয়ে জাতপাতের বিরুদ্ধে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। কংগ্রেসের তরুণ নেতা কানহাইয়া কুমার বলেছেন, ‘‘নাগপুরকে সঙ্ঘভূমি করার চেষ্টা হচ্ছে। যত দিন এক জনও কংগ্রেস কর্মী জীবিত থাকবেন, তত দিন নাগপুর সঙ্ঘভূমি নয়, দীক্ষাভূমি হিসেবে পরিচিত হবে।’’

রাহুল গান্ধী আজ ফের ক্ষমতায় এলে জাতগণনার কথা বলেছেন। রাহুল-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা মাণিকম টেগোর বলেন, ‘‘গত কালই ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’ ঘোষণা হয়েছে। এই যাত্রা ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের দিকে হাওয়া ঘুরিয়ে দেবে। ইন্ডিয়া ভোটে জিতে দিল্লিতে ক্ষমতায় আসবে।’’

ধোঁয়াশায় ঢেকেছে রাজধানীর আকাশ। এ জন্য আজ নাগপুর থেকে ফেরার সময়ে দিল্লি বিমানবন্দরে নামতে পারেনি রাহুলের বিমান। বিমান ঘুরিয়ে জয়পুরে নামানো হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement