(বাঁ দিকে) রাহুল গান্ধী এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির ভোট ময়দানে শুরু পোস্টার-যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে আলোচনা এখন আম আদমি পার্টির (আপ) প্রকাশ করা নতুন পোস্টার নিয়ে। পোস্টারে আপের নিশানায় রয়েছে যেমন বিজেপি, তেমনই কংগ্রেসও। অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দলের পোস্টারে বিশেষ করে নজর কেড়েছেন রাহুল গান্ধী! পোস্টারের ‘ট্যাগ লাইন’ই ভোটযুদ্ধের উত্তাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। পোস্টারে লেখা, ‘‘কেজরীওয়ালের সততা সমস্ত অসৎ লোককে ছাড়িয়ে যাবে!’’ আপ কাদের ‘অসৎ’ বলে মনে করছে, তাঁদের ছবিও পোস্টারে ছাপানো হয়েছে।
আর মাত্র কয়েক দিন। তার পরই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে হতে চলেছে ত্রিমুখী লড়াই। দিল্লিতে আপের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি। তবে কংগ্রেসকে নিয়েও চিন্তা কম নেই কেজরীওয়ালের দলের। ভোটপ্রচারে কেজরীওয়াল তো বটেই, আপের অন্যান্য নেতানেত্রীরাও বিজেপি এবং কংগ্রেসকে এক বন্ধনীতে বসিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছেন। সেই আক্রমণের নতুন কৌশলই হল এই পোস্টার। তাতে রয়েছে প্রধাননমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ-সহ দিল্লির বিজেপি নেতৃত্বের ছবি। সেই সারিতেই জায়গা রয়েছে রাহুলেরও। প্রত্যেককেই ‘অসৎ’ বলে দাবি করেছে আপ।
দিল্লিতে জোরকদমে কংগ্রেস প্রার্থীদের হয়ে প্রচার শুরু করেছেন রাহুল। কংগ্রেসের প্রচারে বার বার উঠে আসছে প্রয়াত দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের কথা। রাহুল ভোটপ্রচারে দাবি করেছেন, ‘‘দিল্লি এখন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলার উন্নয়ন মডেলকে চাইছে। প্রধানমন্ত্রী বা আপ আহ্বায়ক কেজরীওয়ালের মিথ্যা প্রচার এবং পিআর মডেলকে বিশ্বাস করেন না দিল্লীবাসী।’’ শুধু রাহুল নন, কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা অজয় মাকেন কেজরীওয়ালকে ‘দেশবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছেন।
কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেপিও একধারে কেজরীওয়াল এবং তাঁর দলকে আক্রমণ করছে। ভোটপ্রচারের সূচনালগ্নেই মোদী কেজরীর দলে নিশানা করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আপ নয়, আপদ’’! জনসভায় বক্তৃতা করার সময় মোদী বলেছিলেন, ‘‘আপ নামের এই আপদ গত ১০ বছর ধরে দিল্লিকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে।’’ সেই আবহে এ বার বিজেপি এক নতুন পোস্টার প্রকাশ করেছে। সেখানে আপ দলের নেতাদের ‘গুন্ডা’ বলে নিশানা করেছে বিজেপি।
আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে এক দফায় বিধানসভার ৭০টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি হবে গণনা। সেখানে প্রতিটি আসনে মুখোমুখি লড়ছে আপ এবং কংগ্রেস। যদিও গত বছর লোকসভা ভোটে দিল্লিতে আসন সমঝোতা করে লড়েছিল দু’দল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল এবং উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশের সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ইতিমধ্যেই দিল্লির ভোটে বিজেপিকে হারাতে আপকে সমর্থন করেছে। ২০১৩ সালে শীলা দীক্ষিতের সরকার পতনের সময়ও কংগ্রেস দিল্লিতে ২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এখন তা ৫ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে। তবে আপের চিন্তা হল, কংগ্রেস যদি আগের তুলনায় বেশি ভোট পায়, তা হলে বিজেপি লাভবান হবে। কারণ কংগ্রেস আম আদমি পার্টির সংখ্যালঘু, ওবিসি, গরিব ভোটে ভাগ বসাতে পারে।