ফাইল চিত্র।
অমিত শাহ তো অসম-তামিলনাড়ু সফর করে চলে এলেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব কবে ওই সব রাজ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করবে? দলের মধ্যে এই প্রশ্নের মধ্যেই সোমবার রাহুল গাঁধী অসম, তামিলনাড়ুর প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন।
বিহারের ভোটে হারের পরে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচনের আগে রাহুলের এই ‘সক্রিয়তা’ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন কংগ্রেস নেতারা। রাহুল গত সপ্তাহের শেষে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন। বামেদের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে বাংলার কংগ্রেস নেতাদের মতামত শুনে রাহুল জানিয়ে দেন, তিনি সনিয়া গাঁধীকে পুরো বিষয়টি জানাবেন। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কংগ্রেস সভানেত্রীই নেবেন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, সোমবার একই ভাবে অসম ও তামিলনাড়ুর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ওই রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে রাজ্যের নেতাদের মতামত জানতে চান রাহুল। ২০১৩ থেকে ২০১৬—এই তিন বছর বাদ দিলে তামিলনাড়ুতে ২০০৪ থেকেই ডিএমকে-র সঙ্গে কংগ্রেসের জোট রয়েছে। কিন্তু আসন ভাগাভাগি নিয়ে কংগ্রেস ডিএমকে-র সঙ্গে কতটা দর কষাকষিতে যাবে, তা নিয়ে দলের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। বিহারের ভোটে কংগ্রেসের খারাপ ফল দেখে এম কে স্ট্যালিন কংগ্রেসকে বেশি আসন ছাড়তে চাইবেন না বলেও কংগ্রেস নেতাদের মত। এআইসিসি-তে তামিলনাড়ুর ভারপ্রাপ্ত নেতা দীনেশ গুণ্ডু রাও অবশ্য আগেই বলে দিয়েছেন, তাঁরা বেশি দর কষাকষিতে যাবেন না। এডিএমকে-বিজেপি জোটকে হারাতে বিরোধী জোট শক্তিশালী করাই আসল লক্ষ্য হবে।
বিহারে মহাজোটের হারের জন্য কংগ্রেসের দিকেই আঙুল ওঠার পরে দলের নেতারা যুক্তি দিয়েছিলেন, আরজেডি ৭০টি আসন কংগ্রেসকে ছাড়লেও কঠিন আসনগুলিতে কংগ্রেসকে লড়তে হয়েছিল। পি চিদম্বরম বলেছিলেন, শক্তির তুলনায় বেশি আসনে কংগ্রেসের লড়া উচিত হয়নি। এ বার চিদম্বরমের নিজের রাজ্যেই নির্বাচন। অসমেও কংগ্রেস ফের এইউডিএফ-এর সঙ্গে জোট করবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সিএএ-এনআরসিকে হাতিয়ার করে বিজেপি তার রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে। বিজেপি নেতারা এইউডিএফ-কে নিশানা করে ভোটের মেরুকরণ করতে চাইছেন।
রাহুলের এই ভার্চুয়াল বৈঠক নিয়েও অবশ্য বিক্ষুব্ধ নেতারা বলছেন, তাঁকে বিজেপি নেতাদের মতোই সশরীরে রাজ্যে যেতে হবে। আজ তামিলনাড়ুর নেতারাও রাহুলকে ভোটের প্রচারে আরও বেশি সময় দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। শীর্ষনেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষুব্ধ নেতাদের অন্যতম আনন্দ শর্মা রবিবার টুইটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করায় দলে জল্পনা শুরু হয়েছিল। সোমবার তিনি বলেছেন, টুইটে বাক্য আগেপিছে হয়ে যাওয়াতেই বিভ্রান্তি। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিক্ষুব্ধ নেতাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরমহলে প্রশ্ন রয়েছে।