আক্রমণাত্মক রাহুল। ছবি: পিটিআই।
ছবিটা বদলালো না শেষ দিনেও। হৈ-হট্টগোল, স্লোগান, ধর্নার মধ্যে দিয়েই শেষ হল সংসদের বাদল অধিবেশন। এবং তা শেষ হল গুরুত্বপূর্ণ কোনও বিল পাস না হয়েই।
বৃহস্পতিবার অধিবেশন শুরু হতেই একযোগে মুলতুবি প্রস্তাব আনেন কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি এবং সিপিএমের সাংসদরা। প্রস্তাব খারিজ করে দেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় হৈ-হট্টগোল। প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিতে দিতে ওয়েলে নেমে পড়েন বিরোধী সাংসদরা। প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে আসার দাবি জানিয়ে চলতে থাকে বিক্ষোভ। আধ ঘণ্টা পর বাম, তৃণমূল-সহ বন্ধু দলগুলির সঙ্গে ওয়াক আউট করেন কংগ্রেস সাংসদরা।
বিক্ষোভ চলতে থাকে সংসদের বাইরেও। কংগ্রেসের নেতৃত্বে গাঁধীমূর্তির নীচে ধর্না শুরু করে বিরোধীরা। তাতে যোগ দেন তৃণমূলের দুই সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌগত রায়। রাহুল গাঁধীর অনুরোধেই ধর্নায় সামিল হয়েছেন বলে দাবি করেন সুদীপবাবু। পরে তৃণমূল ধর্নাস্থল ছেড়ে গেল তাতে যোগ দেন বাম সাংসদরা।
একসঙ্গে আন্দোলনে কং-তৃণমূল। —নিজস্ব চিত্র।
এ দিনও অবশ্য স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন রাহুল গাঁধী। প্রধানমন্ত্রীকে ‘ভীতু’ আখ্যা দিয়ে কংগ্রেস সহ সভাপতি বলেন, “ভোটে হারার পর আমি ভেবেছিলাম, নরেন্দ্র মোদীর দম আছে। এখন মনে হচ্ছে, আমার সেই ধারণা একেবারেই মিথ্যা। ভয় পেয়েছেন তিনি। নিজেকে প্রমাণ করার সুষোগ অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর আছে। ললিত মোদীকে দেশে ফিরিয়ে আনুন।” গতকাল সংসদে বোফর্স কাণ্ড নিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী এবং সনিকাকে বিঁধেছিলেন সুষমা। এ দিন রাহুল বলেন, “যে মামলায় আদালত পর্যন্ত রাজীব গাঁধীকে ক্লিনচিট দিয়েছে, সেই পুরনো কথা নিয়েই ৩০ বছর ধরে রাজনীতি করে আসছে বিজেপি।”
আরএসএস এবং বিজেপি-কে একযোগে আক্রমণ করে রাহুল বলেন, “আমি দেশকে বিজেপি এবং আরএসএসের হাত থেকে বাঁচাতে এসেছি।” আরএসএস তত্ত্ব নিয়ে মুখ খুলেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। জরুরী অবস্থার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “কংগ্রেস লড়াই করছে একটা পরিবারকে বাঁচাতে। আর বিজেপি লড়াই করছে দেশকে বাঁচাতে।”
তবে কংগ্রেসের আক্রমণ যে সরকার কোনও ভাবেই পিছু হঠছে না, তা ফের এক বার বুঝিয়ে দিয়েছে বিজেপি তথা এনডিএ। এ দিনই ‘গণতন্ত্র রক্ষা’য় বিজয় চক থেকে সংসদ পর্যন্ত মিছিল করেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ছিলেন সুষমা স্বরাজ, লালকৃষ্ণ আডবাণী, রাজনাথ সিংহরা। শুক্রবার এনডিএ শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। যে সব রাজ্যে তারা ক্ষমতায় নেই, সেখানে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অথবা শীর্ষস্তরের কোনও নেতা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন। এ রাজ্যের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ এম জে আকবরকে।