রাহুল গাঁধী। — ফাইল চিত্র
দিল্লির কৃষক বিক্ষোভকে ব্রিটিশ আমলের চম্পারণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। সেই সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ‘সত্যাগ্রহী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। নয়া ৩ কৃষি আইন বাতিলের দাবি নিয়ে সোমবার কেন্দ্রের সঙ্গে সপ্তম দফার বৈঠকে বসতে চলেছেন কৃষক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা। তার ঠিক আগে মোহনদাস করমচন্দ্র গাঁধীর ‘সত্যাগ্রহ’-এর ইতিহাস স্মরণ করিয়ে রাহুলের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
রবিবার টুইটে মোদী সরকারকে ব্রিটিশ আমলের সঙ্গে তুলনা করেছেন রাহুল। লিখেছেন, ‘এই দেশ চম্পারণের মতো ট্র্যাজেডির সাক্ষী হতে চলেছে। সে সময় ব্রিটিশরা ছিল কোম্পানি বাহাদুর। এখন মোদীর বন্ধুরা কোম্পানি বাহাদুর’। কৃষকদের ‘সত্যাগ্রহী’ আখ্যা দিয়ে রাহুল আশা প্রকাশ করেছেন, ‘তাঁরা (আন্দোলনকারীরা) নিজেদের অধিকার ছিনিয়ে নেবেন।’
১৯১৭ সালে বিহারের চম্পারণের কৃষক আন্দোলনের উদাহরণ এখন কেন টানলেন রাহুল? ইতিহাস বলছে, চম্পারণের সত্যাগ্রহ আন্দোলন ছিল নীল চাষের বিরুদ্ধে। সে সময় কৃষকদের নীল চাষে বাধ্য করত নীলকররা। তার প্রতিবাদে মহাত্মা গাঁধীর নেতৃত্বে হয়েছিল ওই আন্দোলন। মনে করা হচ্ছে, নয়া কৃষি আইনকে নীলকরের সঙ্গে তুলনা করে মোদী সরকারের কৃষি নীতিকে আরও এক বার আক্রমণের সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি রাহুল। তাই ইতিহাসকে আশ্রয়। সেই সঙ্গে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে কংগ্রেসের যোগ যে ‘সুপ্রাচীন’ তা স্মরণ করিয়ে দেওয়াও রাহুলের হয়তো উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন: বাংলায় কত ভোট পাবে তৃণমূল? অভ্যন্তরীণ হিসেবে স্বস্তিতে ঘাসফুল
আরও পড়ুন: বিজেপি-র লোকদের ডান্ডা মেরে তাড়ান, নিদান দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতার
দিল্লিতে কৃষক বিক্ষোভ রবিবার ৩৮ তম দিনে পা দিল। চাপের মুখে পড়ে গত বুধবার ষষ্ঠ দফার বৈঠকে কৃষকদের দুটি দাবি মেনে নিয়েছে কেন্দ্র। প্রথমত, খড় পোড়ানোর জন্য কৃষকদের মোটা অঙ্কের জরিমানা না করার দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। দ্বিতীয়ত, নয়া বিদ্যুৎ বিল আইনে পরিণত করার প্রক্রিয়াও আপাতত স্থগিত থাকছে। কিন্তু কৃষকদের মূল দাবি— তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার এবং ফসলের দাম বা এমএসপি-র আইনি গ্যারান্টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি।
সপ্তম দফার বৈঠকের আগে কেন্দ্রকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। দাবি না মিটলে ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসে রাজধানীর বুকে কৃষক প্যারেড করার হুঙ্কার দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। কৃষকদের আইন প্রত্যাহারের দাবির সঙ্গে সহমত কংগ্রেসও। আন্দোলনের প্রথম ধাপ থেকেই সেই দাবি তুলতে শুরু করেছে হাতশিবির। রবিবার রাহুলের টুইটেও সেই মেজাজ।