ছবি: সংগৃহীত।
বিধ্বস্ত অর্থনীতি আর চড়া বেকারত্বের অভিযোগের হুলেই ফের মোদী সরকারকে বিঁধলেন রাহুল গাঁধী।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবরকে উদ্ধৃত করে সোমবার কংগ্রেস নেতার টুইট, “একটি চাকরি, আর এক হাজার কর্মহীন। কী অবস্থা করেছে দেশের।” যে খবরকে উদ্ধৃত করে তাঁর এই কটাক্ষ, সেখানে লেখা হয়েছে, মূলত লকডাউনের সময়ে কাজ হারিয়ে ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে ১১ জুলাই একটি পোর্টাল চালু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যেখানে দক্ষতার ভিত্তিতে উপযুক্ত কর্মী বেছে নিতে পারবেন নিয়োগকারীরা। সেখানে গত ৪০ দিনে কাজের জন্য নাম লিখিয়েছেন ৬৯ লক্ষ জন। শুধু এক সপ্তাহেই ৭ লক্ষ। কিন্তু সেই ৭ লক্ষের মধ্যে কাজ জুটেছে মোটে ৬৯১ জনের কপালে! অর্থাৎ, কার্যত হাজারে এক জন। সেই পরিসংখ্যান তুলেই নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে বিঁধেছেন রাহুল।
গত সপ্তাহেও দেশের মানুষের হাতে কাজ দিতে না-পারা নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধেছিল কংগ্রেস। অন্য একটি খবরকে উদ্ধৃত করে রাহুলের টুইট ছিল, “গত চার মাসে প্রায় ২ কোটি জনের কাজ গিয়েছে। ২ কোটি পরিবারের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে।” কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপসিংহ সুরজেওয়ালার টুইট ছিল, “এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে অন্তত ১.৯ কোটি জনের চাকরি গিয়েছে। শুধু জুলাইয়ে ৫০ লক্ষ।… সব মিলিয়ে, এখনও পর্যন্ত কাজ গিয়েছে প্রায় ১৪ কোটির!” জুলাইয়ে ৫০ লক্ষ কাজ যাওয়ার খবরকে উদ্ধৃত করে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিরও বক্তব্য ছিল, “এটিই (নরেন্দ্র) মোদীর সাফল্য। এ সেই অচ্ছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি ২০১৪ সালে জোর গলায় দিয়েছিলেন তিনি।”
আরও পড়ুন: প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপ লাদাখে, মন্তব্য রাওয়তের
আরও পড়ুন: অনাহারে মৃত্যু যোগী-রাজ্যে, রিপোর্ট তলব
বিরোধীরা বার বার অভিযোগ তুলছেন, মোদী সরকারের ভুল নীতি পথে বসিয়েছে দেশের অর্থনীতিকে। নতুন কাজের সুযোগ তৈরি দূর অস্ত্, চাকরি যাচ্ছে প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রে। লাফিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব। অথচ এই সমস্ত কিছুকে কার্পেটের তলায় চাপা দিতে একের পর এক ইভেন্ট সাজাচ্ছে মোদী সরকার। কখনও রাম মন্দিরের শিলান্যাস, তো কখনও আত্মনির্ভর ভারত কিংবা নতুন শিক্ষা নীতি নিয়ে ব্যাপক প্রচার। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে কাজ তৈরির চেষ্টায় সরকার ব্যর্থ।
তবে উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইইয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৭ থেকে ২৩ অগস্ট, এই এক সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার আগের সাত দিনের (১০ থেকে ১৬ অগস্ট) তুলনায় কমেছে খানিকটা। ৯.১% থেকে তা নেমেছে ৭.৪৬ শতাংশে। মূলত এটি হয়েছে গ্রামে বেকারত্বের হার সাত দিনের ব্যবধানে ৮.৮৬% থেকে ৬.৩২ শতাংশে নেমে আসায়। শহরে অবশ্য তা ৯.৬১% থেকে বেড়ে হয়েছে ৯.৮৯%। কিন্তু বিরোধী এবং বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, অর্থনীতির প্রকৃত ছবি কিংবা কাজের বাজারের বিবর্ণ দশা সাত দিনের ওঠা-পড়ায় ধরা শক্ত। বেকারত্বের কামড় কতটা তীব্র, তার প্রতিফলন বরং আবেদনকারী এবং নিয়োগের অনুপাতে কিছুটা স্পষ্ট বলে তাঁদের দাবি।