মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
গত সপ্তাহেই উপদেষ্টা সংস্থা অক্সফ্যাম ইন্ডিয়া জানিয়েছিল, অতিমারির দু’বছরে ভারতে ধনী-গরিবের মধ্যে আর্থিক অসাম্যের দূরত্ব আরও চওড়া হয়েছে। দেশে ধনকুবেরের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। একই সঙ্গে কমেছে গরিবের সম্পদ। এ বার মুম্বইয়ের একটি গবেষণা সংস্থার বিশ্লেষণেও স্পষ্ট যে, কোভিডের প্রথম বছরে দেশের সব থেকে দরিদ্র ২০ শতাংশ মানুষের আয় ৫৩ শতাংশ কমে গিয়েছে। উল্টো দিকে, সব থেকে ধনী ২০ শতাংশের আয় ৩৯ শতাংশ বেড়েছে। এই সমীক্ষাকে হাতিয়ার করে আজ নতুন উদ্যমে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণে নেমেছে কংগ্রেসও।
ধনী-দরিদ্রের এই দ্রুত বাড়তে থাকা অসাম্যের জন্য মোদী সরকারকে দায়ী করে আজ কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী বলেছেন, কোভিড অতিমারিতে সারা দেশ নাজেহাল। কিন্তু গরিব ও মধ্যবিত্তরা মোদী সরকারের আর্থিক মহামারিরও শিকার। কেন্দ্রীয় সরকারকেই ধনী-দরিদ্রের মধ্যে এই গভীর খাদ খননের কৃতিত্ব দিতে হবে বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।
রাহুলের প্রশ্ন, এ কার ‘অচ্ছে দিন’? কংগ্রেসের অভিযোগ, এমনিতেই যখন অতিমারি, লকডাউনের ধাক্কায় মানুষের আয় কমেছে, তখন মোদী সরকার পেট্রল-ডিজ়েলে শুল্ক বসিয়ে গরিব মানুষের থেকে আরও কর আদায় করছে। অথচ সাধারণ মানুষের হাতে নগদ অর্থসাহায্য তুলে দেয়নি।
অক্সফ্যাম ইন্ডিয়ার সমীক্ষা জানিয়েছিল, গত পৌনে দু’বছরে ভারতে ১০০ কোটি ডলারের মালিকের সংখ্যা ৩৯% বেড়েছে। এমন ১৪২ জনের মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৩ লক্ষ কোটি টাকা। দেশের ধনীতম ১০ শতাংশের হাতে জাতীয় সম্পদের ৪৫ শতাংশ রয়েছে। অথচ আয়ের নিরিখে নীচের দিকে থাকা ৫০ শতাংশের হাতে রয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ। প্রায় একই সুরে মুম্বইয়ের সংস্থা প্রাইস (পিপল্স রিসার্চ অন ইন্ডিয়া’জ কনজ়িউমার ইকনমি) তাদের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানিয়েছে, দরিদ্রতম ২০ শতাংশ পরিবারের আয় ২০২০-২১ সালে (অতিমারির বছরে) ২০১৫-১৬ সালের তুলনায় ৫৩ শতাংশ কমেছে। ১৯৯৫ থেকে এই অংশের মানুষের আয় ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছিল। উল্টো দিকে, ধনীতম ২০ শতাংশ মানুষের আয় কোভিডের বছরেও ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।
কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, সোজা কথায়, দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ পাঁচ বছর আগে যে পরিমাণ আয় করছিলেন, তার থেকে কম আয় করছেন। পর পর সমীক্ষা সেটাই দেখাচ্ছে। যে দরিদ্রতম ২০ শতাংশের আয় ইউপিএ জমানায় ১৮৩ শতাংশ বেড়েছিল, মোদীর আমলে তা অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, অর্থনীতির সঙ্কট গভীর হওয়া সত্ত্বেও সরকার শুধু ধনীদের নিয়ে চিন্তিত এবং তাঁদের আয় বাড়ানোর দিকেই তারা নজর দিচ্ছে।