ফাইল চিত্র।
শাহিন বাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে গত কালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘‘এই বিক্ষোভ নিছক কাকতলীয় নয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।’’ দিল্লিতে আজও জনসভা ছিল মোদীর। সেখানে ‘রাস্তা অবরোধের রাজনীতি’র উল্লেখ করলেও ‘শাহিন বাগ’ শব্দটি আর মুখে আনেননি তিনি। কিন্তু মোদীর গত কালের বক্তৃতার প্রসঙ্গ টেনেই দিল্লির জনসভায় আজ প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধলেন রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। মোদীকে প্রশ্ন প্রিয়ঙ্কার, ‘‘রোজগার কমছে, সেটি কি নিছক কাকতলীয়, না কি পরীক্ষা-নিরীক্ষা?’’
দিল্লি ভোটের মাত্র চার দিন আগে আজ প্রচারে নামলেন গাঁধী পরিবারের ভাই-বোনের জুটি। অনেক দিন ধরেই তাঁদের প্রচারে নামানোর দাবি উঠছিল দলের মধ্যে থেকে। বিশেষ করে প্রিয়ঙ্কার জন্য। কিন্তু এ দিন জঙ্গপুরায় প্রথম সভাটি করলেন রাহুল একাই। আর সঙ্গম বিহারের জামিয়া হমদর্দের কাছে রাহুল-প্রিয়ঙ্কার যৌথ সভা। কোনওটিই শাহিন বাগের বিক্ষোভস্থল থেকে বেশি দূরে নয়। দুই সভাতেই রাহুল-প্রিয়ঙ্কার লক্ষ্য ছিল, মোদীর বিভাজনের রাজনীতি থেকে প্রচারের মোড় যতটা সম্ভব বেকারি-অর্থনীতির দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া।
প্রথম সভায় কংগ্রেসের প্রার্থী তলবেন্দ্র সিংহ মরওয়াহকে দেখিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘এই নেতা পাকিস্তানে গিয়ে ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান তুলে জেলে গিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদী নিজেকে দেশভক্ত বলেন, রোজ ‘পাকিস্তান-পাকিস্তান’ বলেন, কিন্তু বিজেপিতে এমন নেতা-কর্মী আছেন?’’ এর পরেই রাহুলের খোঁচা, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নরেন্দ্র মোদী, পরস্পরের মধ্যে লড়াই বাধাব। ২৪ ঘণ্টা বিভাজন করব, হিংসা-ঘৃণা ছড়াব। পাকিস্তান বলব। এ কেমন দেশভক্তি? মোদী-আরএসএসের এ কেমন হিন্দু ধর্ম? কোন ধর্মে একে অন্যকে হত্যার কথা বলা আছে?’’
এর পরেই মোদীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে রাহুল বলেন, ‘‘সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার ধন্যবাদজ্ঞাপন বিতর্কে বলবেন প্রধানমন্ত্রী। দেখে নেবেন, রোজগার নিয়ে একটি কথাও বলতে পারবেন না। আসলে ওঁর দম নেই সে কথা বলার। আমি প্রশ্ন করব বলে অর্থমন্ত্রীও রোজগারের হিসেব দিচ্ছেন না। আসলে এ সরকার নরেন্দ্র মোদীর সরকার নয়, আদানি-অম্বানীর সরকার। এলআইসি থেকে লালকেল্লা— সব বেচে দিচ্ছে! কোন দিন তাজমহলও বেচে দেবে!’’
প্রিয়ঙ্কাকে দিয়ে প্রচারের আব্দার বেশি থাকলেও সনিয়া গাঁধী-কন্যা রাহুলের সামনে নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে রাখেন। কংগ্রেসের অনেকের এমনই ধারণা। কীর্তি আজাদের স্ত্রী এবং কংগ্রেস প্রার্থী পুনমের আর্জিতে করা সভায় রাহুলের মতোই মোদী ও কেজরীবালকে নিশানা করলেন প্রিয়ঙ্কা। মোদীকে বিঁধে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘একে অন্যের মধ্যে বিভাজন আর সমালোচনা করলেই ‘দেশদ্রোহী’! অথচ সাত ক্ষেত্রে সাড়ে তিন কোটি রোজগার কমেছে। প্রধানমন্ত্রী এত কথা বলেন, এর উল্লেখ নেই। শুধু ২৪ ঘণ্টা ‘মার্কেটিং’ আর তার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ।’’