কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি পিটিআই।
মণিপুর থেকে শুরু করে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ রবিবার শেষ হল মুম্বইয়ে এসে। ‘যাত্রা’ শেষের পর এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদী সরকার একের পর এক ইস্যুতে আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শুধু একা রাহুল নন, বিজেপি বিরোধী অনেক দলের নেতা-নেত্রীরাও রবিবার ‘ন্যায় যাত্রা’র সমাপনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে নিশানা করেছেন মোদী সরকারকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করতে গিয়ে রাহুল টেনে আনেন নির্বাচনে ‘ইভিএম কারচুপি’র প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘রাজার আত্মা রয়েছে ইভিএমে।”
রবিবার মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে ‘ন্যায় যাত্রা’র সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গী বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা। সেই তালিকায় ছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন, আরজেডি নেতা তথা বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ধব ঠাকরে-সহ আরও অনেকে। তা ছা়ড়াও কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও উপস্থিত ছিলেন শিবাজি পার্কের মঞ্চে।
‘ইভিএম কারচুপি’ থেকে ‘নির্বাচনী বন্ড’— একাধিক ইস্যুতে বিজেপি সরকারকে বিঁধেছেন রাহুল। রবিবার বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘ইভিএম এবং দেশের তদন্তকারী সংস্থা ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতরে রয়েছে রাজার আত্মা।’’ সেইসঙ্গে রাহুল রবিবার দাবি করেন, মহারাষ্ট্রের এক প্রবীণ নেতা কংগ্রেস ছাড়ার সময় তাঁর মা সনিয়ার কাছে স্বীকার করেছেন যে, তিনি ‘শক্তি’কে চ্যালে়ঞ্জ করতে পারেননি। জেলে যাওয়ার ভয়ে লজ্জিত ছিলেন। ‘শক্তি’ বলতে রাহুল বোঝাতে চেয়েছেন ‘ইডি, সিবিআই’-এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে।
এখানেই থেমে থাকেননি কংগ্রেস নেতা। ‘ন্যায় যাত্রা’ নিয়ে বলতে গিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘আমরা এই যাত্রা শুরু করেছিলাম কারণ সংবাদমাধ্যমের একটা বড় অংশ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু— বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, কৃষকদের সমস্যা তুলে ধরে না।’’ এর পরই বিজেপিকে নিশানা করে রাহুল বলেন, ‘‘ভারত যদি ভালবাসার দেশ হয়, তা হলে কেন ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে? এ দেশে দরিদ্র, কৃষক, দলিত, নারী এবং যুবকদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে।’’
রাহুলের পাশাপাশি রবিবারের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেছেন বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অনেক নেতাই। মোদী সরকারের ‘নির্বাচনী বন্ড’কে নিশানা করে স্ট্যালিন বলেন, ‘‘এটা হল বিজেপির হোয়াইট কলার দুর্নীতি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ইন্ডিয়া জোট গঠন হবে। এই জোট ভারতের জন্যই। ভারতের এখন এই ঐক্যের দরকার। নির্বাচন ঘোষণা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য বিজেপিকে হারানো। দেশের কাছে সবচেয়ে বড় হুমকি হল বিজেপি।’’ আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ রবিবারের মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘দেখুন আজ আমরা সবাই এক সঙ্গে আছি। এই মঞ্চে থাকা নেতারা জেলে যেতে ভয় পান না।’’ তিনিও ‘ইভিএম কারচুপি’র অভিযোগ তুলেছেন। নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য রবিবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। সেই কথা জানিয়ে রাহুলকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিজেপি বিরোধী জোটকে আরও শক্তিশালী করার কথাও বলেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।