কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী টুইট করেছেন, ‘‘দলিত কি বেটি ভি দেশ কি বেটি হ্যায়।’’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের দাবি, ৯ বছরের মেয়েটির ‘খুনিদের’ যত দ্রুত সম্ভব ফাঁসি দেওয়া হোক। জাতীয় রাজধানীর আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উদ্দেশে তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইট, ‘‘এ দেশে তফসিলি জাতির মহিলাদের প্রতিদিনের যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কতটা অনুভূতিহীন।’’
প্রতিবাদ তীব্র হচ্ছে দিল্লির দলিত বালিকার অপমৃত্যু ঘিরে। সমাজমাধ্যমে উঠে আসছে কুখ্যাত হাথরস ধর্ষণ কাণ্ডের তুলনাও। উত্তরপ্রদেশের ওই ঘটনায় নির্যাতিতা দলিত মেয়েটির দেহ প্রশাসনই তার পরিবারের অনুপস্থিতিতে দাহ করে দিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
৯ বছরের দলিত মেয়েটি থাকত দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পুরানা নাঙ্গাল গ্রামে। গত রবিবার রাতে বাড়ির পাশেই শ্মশানের কুলার থেকে জল আনতে গিয়েছিল সে। দীর্ঘ ক্ষণ পরে শ্মশানের পুরোহিত তার মাকে ডেকে পাঠিয়ে জানান, কুলারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মেয়েটি মারা গিয়েছে। মেয়েটির মা-বাবাকে না-জানিয়েই পুরোহিত ও তাঁর সঙ্গীরা বালিকাটির দেহ ওই শ্মশানেই দাহ করে ফেলেন। পরিবারের সন্দেহ, ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে মেয়েটিকে। পুরোহিত ও আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কেজরীবাল জানিয়েছেন, আগামিকাল মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন তিনি। সুবিচারের পথে সব রকম ভাবে তাঁদের পাশে থাকবেন। স্বাভাবিক ভাবেই রাজনীতির রং লেগেছে ঘটনায়। নাম না-করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উদ্দেশে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবিলম্বে উন্নতির দাবি তুলেছেন কেজরীবাল। টুইটারে লিখেছেন, ‘‘যে নৃংশসতার পরে মেয়েটিকে খুন করা হয়েছে, তা লজ্জাজনক। দোষীদের যত দ্রুত সম্ভব ফাঁসি চাই।’’ এই বিষয়ে আলোচনা চেয়ে আজ রাজ্যসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনেন কংগ্রেস সাংসদ শক্তিসিন গোহিল। তিনি বলেন, মেয়েটির পরিবারকে সুবিচার দিতে সরকার কী পদক্ষেপ করেছে, সে বিষয়ে কথা বলুক।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের তিরও অমিত শাহ এবং দিল্লি পুলিশের দিকে। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নজরদারিতে থাকা জাতীয় রাজধানীতেই মেয়েটিকে ধর্ষণ ও জোর করে পুড়িয়ে দেওয়া হল বলে অভিযোগ।... দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নড়বড়ে। অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ যে রাকেশ আস্থানাকে সম্প্রতি দিল্লির পুলিশ কমিশনার করা হল, তিনি এখন থেকেই কাজে ব্যর্থ হতে শুরু করলেন? নাকি অন্যান্য কাজ সামলাতেই তাঁকে আনা হল? লজ্জা।’’ টুইটে বিজেপিকেও ট্যাগ করেছেন অভিষেক।
বস্তুত, অবসরের মাত্র তিন দিন আগে আস্থানাকে কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছিলেন আইনজীবী এম এল শর্মা। এ দিন প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার কাছে আগামী ৯ অগস্ট জরুরি ভিত্তিতে সেই মামলার শুনানির আবেদন জানান তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আগে আবেদনটি মামলার তালিকাভুক্ত হোক। আমরা দেখব।’’