নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই
সুপ্রিম কোর্টের রিপোর্ট তলব। ফরাসি সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট। দুই অস্ত্র হাতে পেয়েই নজিরবিহীন আক্রমণ করে এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বললেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সভাপতির আরও তোপ, রাফাল চুক্তি ধামাচাপা দিতেই ‘জরুরি’ ভিত্তিতে ফ্রান্স গিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলাঁদ বলেছিলেন, রাফাল চুক্তিতে অনিল অম্বানির সংস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভারত সরকার চাপ দিয়েছিল। তার পর থেকেই রাফাল নিয়ে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ান রাহুল। তার মধ্যে বুধবার সুপ্রিম কোর্ট রাফাল চুক্তির সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত যাবতীয় নথি তলব করেছে। এ নিয়ে রাতেই টুইট করে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন রাহুল গাঁধী। বলেন, এটা পরিষ্কার, রাফাল চুক্তি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীই।
এর পর আবার ফরাসি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, রাফালের বরাত পেতে হলে অনিল অম্বানির সংস্থার সঙ্গে দাসো এভিয়েশনকে চুক্তি করতেই হত। এটা ছিল ‘বাধ্যতামূলক।’ এছাড়া দাসোর কাছে কোনও বিকল্প ছিল না। যদিও এই খবর প্রকাশের পরই দাসো বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘অনিল অম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপকে স্বাধীনভাবেই বেছে নেওয়া হয়েছিল।’’
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের কাছে রাফাল-তথ্য চাইল সুপ্রিম কোর্ট
কিন্তু তাতে বিতর্ক থামেনি, বরং রাফালে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। তার রেশ ধরেই বৃহস্পতিবার রাজধানীতে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাহুল। বলেন, ‘‘এটা পুরোপুরি পরিষ্কার যে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিগ্রস্ত। আমি আবারও বলছি ভারতের প্রধানমন্ত্রী এক জন দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ। দুর্ভাগ্যের বিষয় এটাই যে, ক্ষমতায় আসার সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রচারের মূল সুরই ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই।’’ একইসঙ্গে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘উনি আসলে আপনাদের নন, অনিল অম্বানির প্রধানমন্ত্রী।’’
আরও পড়ুন: তিতলির ঝাপটায় বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা, বাতিল, ঘুরপথে বহু ট্রেন
বুধবারই ফ্রান্স সফরে উড়ে গিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এ নিয়েও প্রশ্ন তুলে রাহুল বলেন, ‘‘এখন দেখতেই পাচ্ছেন হঠাৎ করে ফ্রান্স সফরে যাচ্ছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এবং সেই দাসো সংস্থাতেই পরিদর্শন করবেন। কী এমন জরুরি অবস্থা তৈরি হল, যে তড়িঘড়ি ফ্রান্সে যেতে হচ্ছে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে।’’ রাহুলের অভিযোগ, রাফাল দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে দাসো এভিয়েশনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন তিনি।
নির্মলা সীতারামনের সফর নিয়ে প্রশ্ন তুললেও রাহুলের এ দিনের আক্রমণের মূল নিশানায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই। তিনি এ দিন বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, রাফাল চুক্তি শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রধানমন্ত্রী মোদীই যে রাফাল চুক্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেটাই বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন কংগ্রেস সভাপতি।