—ফাইল চিত্র
পরিযায়ী শ্রমিকদের নথিবদ্ধকরণের কাজ খুবই শ্লথ গতিতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। করোনা অতিমারির মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধে তাঁদের কাছে পৌঁছে দিতে এই নথিবদ্ধকরণ অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। এই বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির উদ্যোগ নিয়ে আদালত মোটেই খুশি নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিচারপতিরা।
গত বছরে অতিমারির সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুরবস্থা দেখে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট। তখন বেশ কিছু নির্দেশিকা দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সম্প্রতি ফের শ্রমিকদের কল্যাণে পদক্ষেপ চেয়ে সেই মামলাতেই নয়া অন্তর্বর্তী আর্জি পেশ করেছেন তিন সমাজকর্মী।
আজ শুনানিতে আবেদনকারীদের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, কয়েকটি রাজ্যের হলফনামা দেখে বোঝা যাচ্ছে গত বছরে চালু করা ‘আত্মনির্ভর’ প্রকল্প তারা চলতি বছরে আর চালু করেনি। পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া একান্ত প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন প্রশান্ত। বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এম আর শাহের বেঞ্চ জানায়, গত বছরে পরিযায়ী ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নথিবদ্ধকরণ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার গতি অত্যন্ত শ্লথ। সে কাজ শেষ হওয়া প্রয়োজন। বিচারপতিরা বলেন, ‘‘আমরা চাই সংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের তথ্যও নথিবদ্ধ করা হোক। সরকারকে বলছি, এই প্রক্রিয়ায় গতি আনা হোক।’’ বিচারপতিদের বক্তব্য, ‘‘এটা কঠিন কাজ। কিন্তু এ কাজ শেষ করতে হবে। আমরা চাই, যাঁদের সুবিধে পাওয়ার কথা তাঁরা যেন সুবিধা পান।’’ পরিযায়ী শ্রমিকেরা যাতে সুবিধে পান তা নিশ্চিত করতে নজরদারি প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতিরা।
বেঞ্চের বক্তব্য, ‘‘কাগজে কলমে দেখা যাচ্ছে, সরকার কল্যাণ প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। প্রশ্ন হল, তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌঁছচ্ছে কি না।’’
২০১৮ সালে একটি মামলায় কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক জানায়, অসংগঠিত শ্রমিকদের সম্পর্কে জাতীয় তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হচ্ছে। সেই তথ্যভাণ্ডার তৈরির কাজ এখন কোন পর্যায়ে, তা জানাতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। সলিসিটর জেনারেল জানান, তিনি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এই বিষয়ে আদালতকে তথ্য সরবরাহ করবেন। আর্জিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে সরাসরি টাকা তুলে দেওয়ার প্রকল্প চালু করার নির্দেশ চেয়েছিলেন আবেদনকারীরা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। তাই আদালত এ নিয়ে নির্দেশ দেবে না।