Congress and Opposition Alliance

কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন শুরু ইন্ডিয়া জোটে

তৃণমূল সূত্রে জানানো হচ্ছে, মাত্র তিন দিনের নোটিসে ডাকা ইন্ডিয়ার বৈঠকে হাজির থাকতে পারবেন না নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উত্তরবঙ্গে আগে থেকেই কর্মসূচি রয়েছে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:২৭
Share:

রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

পরাজয়ের ধাক্কায় শীতঘুম কাটল কংগ্রেসের। প্রায় তিন মাস পরে তারা বুধবার বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার বৈঠক ডেকেছে। কিন্তু বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার শরিক দলগুলির ধারণা, বড় দল হিসেবে জোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় তৈরি হয়েছে গোবলয়ে বিপুল ব্যর্থতার পরে।

Advertisement

আজ চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে যে সব শরিক ইন্ডিয়া জোটের কোঅর্ডিনেশন কমিটিতে রয়েছে (১৪টি দল), তাদের নেতাদের আগামী ৬ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বৈঠকে ডেকেছেন। তৃণমূল, এসপি, জেডিইউ, আপ, এনসি-র মতো অনেক শরিকই মনে করছে, আরও অনেক আগেই ডাকা উচিত ছিল এই বৈঠক। অযথা সময় নষ্ট করা হল। সেই সঙ্গে তৃণমূল, জেডিইউ এবং এসপি-র মতো দল এটাও স্পষ্ট বলছে, একের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ে কংগ্রেসের ব্যর্থতা সামনে চলে এসেছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেছেন, “বিজেপির বিরুদ্ধে মুখোমুখি লড়াই করে জয়ের ব্যাপারে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্য দেশে প্রশ্নাতীত।”

তৃণমূল সূত্রে জানানো হচ্ছে, মাত্র তিন দিনের নোটিসে ডাকা ইন্ডিয়ার বৈঠকে হাজির থাকতে পারবেন না নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর উত্তরবঙ্গে আগে থেকেই কর্মসূচি রয়েছে। সম্ভবত আসবেন না দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দলের পক্ষ থেকে বৈঠকে কাকে পাঠানো হবে তা নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। একই ভাবে আপ-এর পক্ষ থেকে অরবিন্দ কেজরীওয়াল বৈঠকে থাকবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। এসপি-র সহ সভাপতি কিরণময় নন্দ ঝাঁঝালো ভাষায় জানালেন, “কংগ্রেসের অহমিকা এবং ব্যর্থতার কারণেই আজ বিজেপির উত্থান। তাদের নেতৃত্বে কোনও জোট হলে মানুষের কাছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না। তবে জোটে আছি যখন কেউ নিশ্চয়ই বুধবার থাকবেন। অখিলেশ সিংহ যাবেন কি না তা স্থির হয়নি।” মধ্যপ্রদেশের বুন্দেলখণ্ড এলাকায় পাঁচটি আসন চেয়েছিলেন অখিলেশ কংগ্রেসের কাছে। কমলনাথ তা তাঁকে দেননি বরং প্রকাশ্যেই বলেছিলেন “কে এই অখিলেশ-টখিলেশ?”

Advertisement

এর আগেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কংগ্রেসের তরফ থেকে বৈঠক না-ডাকা নিয়ে অভিযোগের স্বরে বলেছিলেন, “ইন্ডিয়ার কোনও কাজই এখন করা যাচ্ছে না কারণ কংগ্রেস পাঁচ রাজ্যের ভোট নিয়ে অতি ব্যস্ত। আমরা (বিরোধী দলগুলি) সবাই মিলে কংগ্রেসকে শক্ত করার চেষ্টা করছি কিন্তু তারা বিধানসভা ভোটগুলির জন্য অন্য কিছুতে উৎসাহী নয়।” আজ তাঁর দলের মুখপাত্র কে সি ত্যাগী বলেছেন, “এটা প্রমাণ হয়ে গেল কংগ্রেস একা জিততে পারে না। সবাই মিলে ইন্ডিয়াকে শক্তিশালী করতে হবে। যদি জোটের বৈঠক আরও কয়েক মাস আগে ডাকা হত তাহলে তা অনেকটাই কার্যকরী হত।“ দলের সাধারণ সম্পাদক নিখিল মণ্ডলের কথায়, “কংগ্রেস পাঁচ রাজ্য নিয়ে এতটাই মেতে ছিল যে তারা জোটকে অবজ্ঞা করছে। কিন্তু খারাপ ফলাফল করল। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এই জোটের স্থপতি। তাঁকেই জাহাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক।”

এনসি নেতা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, এই যদি পরিস্থিতি হয় তাহলে বিরোধী জোট চব্বিশের ভোট জিততে পারবে না। তাঁর কথায়, “রাজ্যের নির্বাচনগুলিতে ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলের ফলাফল বিচার করে বলতেই হচ্ছে, এই যদি পরিস্থিতি হয় তাহলে ভবিষ্যতে আমরা জিততে পারব না। আমরা শুনছিলাম কংগ্রেস সহজেই জিতে যাবে। তারা নিজেরাও সেটাই বলছিল। এখন দেখা যাচ্ছে এই সব দাবি ভিত্তিহীন ছিল। যাই হোক তিন মাস পরে আবার যে তাদের ইন্ডিয়ার কথা মনে পড়েছে এটাই ভাল।”

রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় এবং মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয়ের পরে আম আদমি পার্টি (আপ)-কে উত্তর ভারতের ‘সবচেয়ে বড় বিরোধী দল’ হিসেবে দাবি করেছে আপ। দলের পক্ষ থেকে সমাজমাধ্যমে লেখা হয়েছে, ‘‘এ দিনের ফলাফলের পরে, আম আদমি পার্টি উত্তর ভারতের বৃহত্তম বিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেল দুই রাজ্য‌ের সরকার নিয়ে, পঞ্জাব এবং দিল্লি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement