লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে বোঝাপড়া হলেও কংগ্রেসের কোনও ভাবেই ৫৩৪টি আসনের মধ্যে ৩৭০টির কম আসনে লড়া উচিত নয়। ফাইল চিত্র।
বিরোধী ঐক্যের সলতে পাকানো হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বিরোধী ঐক্যের স্বার্থে কংগ্রেসের কতখানি ‘আত্মত্যাগ’ করা উচিত, তা নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের একাংশ নেতার মতে, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে বোঝাপড়া হলেও কংগ্রেসের কোনও ভাবেই ৫৩৪টি আসনের মধ্যে ৩৭০টির কম আসনে লড়া উচিত নয়।
কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পরে নীতীশ কুমার আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব থেকে শুরু করে অধিকাংশ আঞ্চলিক দলের মতে, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে হলে যে যেখানে শক্তিশালী, বাকিদের তার পিছনে দাঁড়াতে হবে। একের বিরুদ্ধে একের লড়াই জরুরি। তাঁদের মতে, লোকসভার যে প্রায় ২০০টি আসনে বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের সরাসরি লড়াই, কংগ্রেস শুধু সেখানে নজর দিক।
নবান্নে যখন নীতীশ-মমতা বৈঠক চলছে, দিল্লিতে তখন রাহুল শিবিরের এক নেতা এই তত্ত্ব খারিজ করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর ঠিক এই রণনীতির কথাই বাতলেছিলেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব তা গ্রহণ করেনি।’’ তাঁর যুক্তি, কংগ্রেস একসময় একাই ৫৪৩টির মধ্যে ৪৫০টি আসনে লড়েছে। খুব কম হলেও দল ৩৯০টি আসনে লড়েছে। এখন নরেন্দ্র মোদীর বিজেপিকে হারাতে হলেও কংগ্রেসের অন্তত ৩৭০টি আসনে লড়া উচিত।’’ কংগ্রেসে শশী তারুর, মণীশ তিওয়ারি, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির মতো নেতারা অবশ্য মনে করেন, বিরোধী জোটে বিভাজন রুখতে যে সব রাজ্যে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী, সেখানে কংগ্রেসের জায়গা ছেড়ে দেওয়া উচিত। রাহুল-ঘনিষ্ঠ শিবিরের নেতাদের যুক্তি, কংগ্রেস বিরোধী ঐক্য চাইবে। কিন্তু নিজের লোকসান করে নয়। আজ নীতীশ কুমার জোট নিয়ে বৈঠক করলেও এআইসিসি সূত্রের খবর, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেও পরে মমতা, অখিলেশ-সহ সব বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে কথা বলবেন। নীতীশই কংগ্রেসের হয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলবেন, এমন নয়। সংসদ অধিবেশনের সময় দিল্লিতে খড়্গের বাড়িতে নৈশভোজে যে সব দল হাজির ছিল, সেই সব দলের প্রধানদের সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি নিজেই কথা বলে তাঁদের বিরোধী জোট নিয়ে বৈঠকে আহ্বান জানাবেন। এপ্রিলের শেষে ওই বৈঠকের প্রস্তাব ছিল। কর্নাটক বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস নেতারা ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সেই পরিকল্পনা পিছিয়ে দিতে হয়েছে। ১৩ মে কর্নাটকের ফল ঘোষণার পরেই ওই বৈঠক হবে। কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, কর্নাটক জিতলে তাঁরা বিরোধী জোটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে আরও শক্তপোক্ত অবস্থানে থাকবেন।