প্রতীকী ছবি।
কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) সদস্যদের আর্থিক সুরাহা দেওয়ার নামে আদতে আর্থিক ক্ষতির ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র— বুধবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ঘোষণা পর্ব শেষ হতেই এমন অভিযোগ ধেয়ে এল ট্রেড ইউনিয়নের তরফে। তাঁদের মতে, আগামী তিন মাসে পিএফ খাতে কর্মী ও নিয়োগকারীর জমা ১২% থেকে কমিয়ে ১০% করায় কর্মীদের আয় কার্যত ২% কমবে। অথচ তাদের হাতে নগদের জোগান বাড়ায় আয়কর খাতে গুনতে হবে বাড়তি টাকা।
এআইইউটিইউসির সভাপতি ও পিএফের অছি পরিষদের প্রাক্তন সদস্য শঙ্কর সাহার তোপ, “আর্থিক সাহায্য দেওয়ার নাম করে বাহবা কুড়োতে চাইছে কেন্দ্র। কিন্তু আসলে মালিকের সুবিধা হবে এতে। আর আর্থিক দায় বহন করতে হবে কয়েক কোটি সাধারণ মানুষকে।’’ কেন্দ্রের অবশ্য দাবি, প্রস্তাবের উদ্দেশ্য পিএফের আওতায় থাকা কর্মী এবং নিয়োগকারীদের হাতে বাড়তি নগদের ব্যবস্থা করা।
গত মার্চে ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা’য় বলা হয়েছিল, যে সব সংস্থায় সর্বোচ্চ ১০০ জন কর্মী কাজ করেন এবং তাঁদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেতন ১৫,০০০ টাকার মধ্যে, সেখানে মার্চ থেকে মে— এই তিন মাস নিয়োগকারী এবং কর্মীদের পিএফ খাতে দেয় টাকা পুরোটাই দিয়ে দেবে কেন্দ্র। বুধবার ওই সুবিধা অগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তারই সঙ্গে রয়েছে নতুন প্রস্তাব। বর্তমানে পিএফ খাতে কর্মীর মূল বেতনের ১২% টাকা জমা হয়। সমপরিমাণ টাকা দেন নিয়োগকারীও। সীতারামন বলেছেন, যে-সব সংস্থা গরিব কল্যাণ যোজনার আওতায় নেই, তাদের নিয়োগকারী ও কর্মীদের পিএফে মূল বেতনের ১০% করে জমা দিলেই হবে। তবে সরকারি এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় কর্মী ও নিয়োগকারীদের ১২% করেই পিএফ জমা দিতে হবে। নতুন ব্যবস্থা তিন মাস চালু থাকবে।
কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পিএফ খাতে নিয়োগকারী যে-টাকা দেন, তা আসলে কর্মীরই অর্জিত টাকা এবং তাঁর বেতনের অঙ্গ। সেই টাকা ২% কমার অর্থ, মাসিক আয় ২% ছাঁটাই। অথচ লোকসান পুষিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেননি নির্মলা। পিএফে জমা টাকায় আয়কর বসে না। নয়া প্রস্তাব অনুযায়ী যে-অতিরিক্ত ২% টাকা কর্মীর হাতে আসবে, তা আয়করের আওতায় পড়বে। অনেক ক্ষেত্রে আয়কর গুনতে হতে পারে ৩০% পর্যন্ত।