প্রতীকী ছবি।
ফের আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রতিষেধক নীতি। কেরলকে বরাদ্দ কোভিড প্রতিষেধক কত দিনের মধ্যে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে তা জানাতে নির্দেশ
দিল কেরালা হাই কোর্ট। কোভ্যাক্সিনের উৎপাদন সংক্রান্ত প্রযুক্তি ও পেটেন্টের অধিকার অন্য উৎপাদনকারী সংস্থার হাতেও তুলে দেওয়া নিয়েও কেন্দ্রের অবস্থান জানতে চেয়েছে আদালত।
কেরালা হাই কোর্টে পেশ করা আর্জিতে আবেদনকারী কে পি অরবিন্দ্রন কয়েকটি বিষয়ে আদালতের নির্দেশ চেয়েছেন। সেগুলি হল:
১। যে নীতির ফলে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে ভিন্ন ভিন্ন দামে প্রতিষেধক কিনতে হচ্ছে সেই নীতি খারিজ করা
২। সব বয়সের নাগরিককেই বিনা খরচে প্রতিষেধক দেওয়া
৩। যে সব সংস্থা কোভ্যাক্সিন উৎপাদন করতে পারে তাদের সকলের হাতে প্রযুক্তি ও পেটেন্টের অধিকার তুলে দেওয়া
৪। কোভিড প্রতিষেধকের দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া
৫। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিষেধক সংগ্রহ করা
৬। সব সংস্থার প্রতিষেধককে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের ছাড়পত্র দেওয়া
৭। ভ্যাকসিনের মেধাস্বত্ত্ব কাদের হাতে রয়েছে সেই তথ্য প্রকাশ করা
আজ মামলার শুনানিতে আবেদনকারীর কৌঁসুলি পি সুগথন জানিয়েছেন, ভারত বায়োটেক ছাড়াও অন্তত ১৯টি সংস্থা রয়েছে যারা কোভ্যাক্সিন উৎপাদন করতে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও পেটেন্টের অধিকার তাদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতে হবে কেন্দ্রকে। পাশাপাশি কেন্দ্র ও রাজ্যকে যদি ভিন্ন ভিন্ন দামে প্রতিষেধক কিনতে হয়
তবে তা সংবিধানে বর্ণিত সাম্যের নীতির বিরোধী।
কেরলে প্রতিষেধক দেওয়ার চিত্র খতিয়ে দেখে বিচারপতি রাজা বিজয়রাঘবন ও বিচারপতি এম আর অনীতার বেঞ্চ জানায়, এখনও রাজ্যের বহু বাসিন্দা প্রতিষেধক পাননি। উদ্বিগ্ন বিচারপতিরা বলেন, ‘‘কোন সময়ের মধ্যে রাজ্যের বরাদ্দ প্রতিষেধক পাওয়া যাবে তা জানাক কেন্দ্র। আমরা স্পষ্ট চিত্র জানতে চাই।’’
বিচারপতিদের বক্তব্য, ‘‘যে সময় লাগানো হচ্ছে তার মধ্যে করোনাভাইরাসের নয়া স্ট্রেন তৈরি হতে পারে। তাতে আরও মৃত্যুর ঘটনা ঘটবে।’’ প্রতিষেধক উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বায়ো-সুরক্ষা সম্পন্ন উৎপাদন কেন্দ্র কেরলে আছে কি না তাও জানতে চান বিচারপতিরা।
কেরল সরকারের আইনজীবী কে ভি সোহন বলেন, ‘‘রাজ্যে প্রতিষেধক তৈরির স্বপ্ন দেখা ভাল। কিন্তু তা বর্তমানে সম্ভব নাও হতে পারে। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব কেন্দ্র যতটা সম্ভব প্রতিষেধক সরবরাহ করুক। রাশিয়া, কিউবা, কোনও দেশ থেকেই আসা প্রতিষেধকেই আমাদের আপত্তি নেই।’’
কেন্দ্রের আইনজীবী রাজা কুমার জানান, একটু সময় পেলেই কেন্দ্র প্রতিষেধক সরবরাহ নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে। প্রতিষেধক উৎপাদন সংক্রান্ত প্রযুক্তি ও মেধাস্বত্ত্ব অন্য সংস্থার হাতে তুলে দেওয়াও কেন্দ্রের নীতির বিষয়। তা নিয়েও জবাব দেওয়া হবে। আগামী শুক্রবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।