বালুভাস্কর্যেও রসগোলা দিবস। পুরীর সৈকতে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
পুরীর সমুদ্রসৈকতে বালির স্তূপে জগন্নাথ মন্দিরের আদল। মন্দিরের দরজায় লক্ষ্মীর মুখশ্রী। কাছেই দাঁড়িয়ে প্রভু জগন্নাথ তাঁকে রসগোল্লা খাওয়াতে যাচ্ছেন।
শনিবার শ্রীক্ষেত্রে এ বারের রথযাত্রার শেষ দিনের আচার নীলাদ্রি বিজের আগেই বালুভাস্কর্যের এই ছবিখানি টুইটারে দেশবিদেশের ভক্তদের কাছে পৌঁছে গেল। শিল্পী পুরীবাসী দেশেবিদেশে নামজাদা স্যান্ডআর্টিস্ট সুদর্শন পট্টনায়ক। দিনটা জগন্নাথভক্তদের কাছে ‘রসগোলা দিবস’ও। শ্রীমন্দিরের রীতিমাফিক গুন্ডিচাবিহারের পরে মন্দিরের রত্নবেদীতে ফিরতে জগন্নাথকে স্ত্রী লক্ষ্মীদেবীর মান ভঞ্জন করতে হয়। এই অনুষ্ঠানটির দৃষ্টান্ত মেলে ধরেই ওড়িশা সরকারও রসগোল্লা আবিষ্কারের কৃতিত্ব হিসেবে জিয়োগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন তকমা আদায়ে ঝাঁপিয়েছিল। বাংলার রসগোল্লা আগেই জিআই লাভ করে। এর পরে ওড়িশাও তাদের ‘রসগোলা’র জন্য গত বছরই জিআই পেয়েছে। এ বারে রথযাত্রার নীলাদ্রি বিজের সেই বিশেষ উপলক্ষটি স্মরণের পরিকল্পনা ছিল ওড়িশা সরকারের। কোভিড-আবহে সব পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে।
তবু সুদর্শন পট্টনায়কের কাজটি স্মরণীয় হয়ে থাকল।
ভক্তের শান্তি হল! প্রশাসনেরও। ওড়িশা সরকার তথা প্রশাসনের জন্য গভীর স্বস্তির নিঃশ্বাস বয়ে আনল শনিবারের বিকেল। মোটামুটি নির্দিষ্ট সময়ে নীলাদ্রি বিজের অনুষ্ঠান শেষে বিকেল চারটে নাগাদ মন্দিরে রত্নবেদীতে ফিরে গেলেন বলভদ্র, সুভদ্রা ও জগন্নাথ।
আরও পড়ুন: দেশ জুড়ে হেনস্থা করোনা রোগীদের
তবে রথযাত্রায় সংক্রমণ ছড়ায়নি নিশ্চিত হতে আগামী ১০ জুলাই সেবায়েতদের ফের কোভিড পরীক্ষা করাবে ওড়িশা প্রশাসন। ওড়িশার অতিরিক্ত মুখ্য সচিব সুরেশ মহাপাত্র শনিবার বলেন, ‘‘রথযাত্রার অনুষ্ঠানের সময়ে ভাইরাস ছড়ায়নি তা নিশ্চিত হতে সংশ্লিষ্ট সেবায়েতদের আবার কোভিড পরীক্ষা করানো হবে। উল্টোরথের আগে তাঁদের কোভিড পরীক্ষা করা হয়েছিল। কয়েক দিন বাদে তাঁরা সম্পূর্ণ সুস্থ নিশ্চিত হতেই আবার পরীক্ষা করানো হবে।’’
জগন্নাথ রত্নবেদীতে ফিরলেও এখনই ভক্তদের মন্দিরে দর্শনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। দেশে লকডাউনের গিঁট আলগা করা হলেও কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে এটা মাথায় রেখেই এই সতর্কতা বজায় রাখছে নবীন পট্টনায়কের সরকার। সেবায়েতদেরও মত, রথযাত্রা জগন্নাথদেবের লীলা হিসেবে ব্যাহত হওয়া উচিত হত না। কিন্তু ভক্তদের এখনই দর্শনের আবশ্যকতা নেই। ৩১ জুলাইয়ের পরে কবে দর্শন হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে ওড়িশা সরকার।