রাজ্যপাল বানোয়ারীলাল পুরোহিত। ফাইল ছবি
পঞ্জাবের আপ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সঙ্গে সম্মুখ সমরে নামলেন রাজ্যপাল বানোয়ারীলাল পুরোহিত।
বিতর্কের কেন্দ্রে আপ সরকারের প্রস্তাবিত বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন। ক’দিন আগেই এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। কিন্তু ফের এই প্রস্তাব রাজ্যপালের কাছে পাঠালে তিনি সম্ভাব্য অধিবেশনের আলোচ্যসূচি চেয়ে বসেছেন। যা ক্ষুব্ধ করে তুলেছে মুখ্যমন্ত্রীকে। টুইটার ও চিঠিতে পরস্পরকে আক্রমণও শুরু হয়েছে। অধিবেশন ডাকা নিয়ে সাংবিধানিক অবস্থান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল। অন্যদিকে আপ নেতা রাঘব চাড্ডার দাবি, সরকার ফেলতে সরাসরি বিজেপির ‘অপারেশন পদ্ম’-র অংশীদার হয়ে উঠেছেন বানোয়ারিলাল পুরোহিত।
গত ২২ সেপ্টেম্বর বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে আস্থাভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মান। তাঁর দাবি ছিল, পঞ্জাবে আপের সরকার ফেলতে বিজেপির চক্রান্তের মধ্যেই তিনি দেখিয়ে দিতে চান— সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কদের সমর্থন তাঁর দিকেই রয়েছে। রাজ্যপাল শুরুতে অধিবেশন ডাকার সেই প্রস্তাব মেনে নিলেও পরে নিজের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেন। তিনি যুক্তি দেন, আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করেই এই পদক্ষেপ করেছেন।
বিরোধের এই প্রেক্ষাপটেই আপ সরকার আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকতে চাইছে। রাজ্য মন্ত্রিসভা সেই প্রস্তাবে ছাড়পত্রও দিয়েছে। কিন্তু রাজ্যপাল আজ জানতে চেয়েছেন, কী বিষয়ে আলোচনা করতে এই অধিবেশন ডাকা হচ্ছে, তা তাঁকে জানাতে হবে। সাধারণ ভাবে, বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে রাজ্যপালের সম্মতি নেওয়ার সময় আলোচ্যসূচি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মান টুইট করে পাল্টা বলেছেন, ‘‘গত ৭৫ বছরে কোনও রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল সংসদ কিংবা বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে আলোচ্যসূচি চেয়ে পাঠাননি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘এর পরে রাজ্যপাল সমস্ত ভাষণের কপিও চেয়ে বসবেন। সেজন্য তাঁর অনুমোদন নিতে হবে।’’
এর পর মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘আপনার বিবৃতি পড়ে বোঝা যাচ্ছে, আপনি আমার উপর রেগে আছেন। মনে হচ্ছে, আইনি পরামর্শদাতারা আপনাকে ঠিক বোঝাচ্ছেন না। আপনি যদি সংবিধানের ১৬৭ ও ১৬৮ নম্বর অনুচ্ছেদ দেখেন, তা হলে নিশ্চিত ভাবে আমার সম্পর্কে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাবে...।’’ সংবিধানের ১৬৭ নম্বর অনুচ্ছেদে রাজ্যপালের সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বের কথা এবং অনুচ্ছেদ ১৬৮-তে বিধানসভার গঠনের বিষয়ে বলা হয়েছে।