‘বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্যের বক্তব্য, ‘‘প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশে গিয়ে নিজেকে উত্তরপ্রদেশের মেয়ে বলে পরিচয় দিচ্ছেন। আর উত্তরপ্রদেশ-বিহারের বাসিন্দাদের যখন পঞ্জাবে অপমান করা হচ্ছে তখন তিনি হাততালি দেন। এখানেই তাঁর দ্বিচারিতা।’’
ফাইল চিত্র।
এক ওয়েব সিরিজ়ে পঞ্জাবে সক্রিয় অপরাধীদের এক গোষ্ঠীর উপরে ‘ভাইয়া’ তকমা লাগিয়ে পঞ্জাবে অপরাধ জগতে প্রাদেশিক ভাগাভাগি ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। আজ যেন সেই প্রাদেশিকতাকে সরাসরি ভোটের আসরে এনে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী। তাঁর পাশে বসে হাততালি দিলেন উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের মুখ হয়ে ওঠা প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা।
আজ পঞ্জাবে এক রোড-শোয়ে যান চন্নী ও প্রিয়ঙ্কা। সেখানে চন্নী বলেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা পঞ্জাবের বৌমা। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, দিল্লির ভাইয়ারা এখানে এসে রাজত্ব করতে পারবেন না। উত্তরপ্রদেশের ভাইয়াদের পঞ্জাবে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।’’ চন্নীর কথায় হেসে হাততালি দেন প্রিয়ঙ্কাও।
এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের মুখ প্রিয়ঙ্কা কী ভাবে এই মন্তব্যে হেসে হাততালি দিলেন? অনেকে মনে করিয়ে দেন, কেবল প্রিয়ঙ্কা নয়, নেহরু-গান্ধী পরিবারের রাজনীতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। ওই পরিবারের চার সদস্যকে সংসদে পাঠিয়েছে উত্তরপ্রদেশই।
রাজনীতিকদের মতে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবালকে নিশানা করেছেন চন্নী। খোদ কেজরীওয়ালের বক্তব্য, ‘‘কথাটা লজ্জাজনক। কোনও ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্যের আমরা নিন্দা করছি।’’ পঞ্জাবে আপের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভগবন্ত সিংহ মান মনে করিয়ে দিয়েছেন, প্রিয়ঙ্কা নিজে আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। কেজরীওয়ালের বক্তব্য, ‘‘তাহলে উনিও ভাইয়া।’’
বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্যের বক্তব্য, ‘‘প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশে গিয়ে নিজেকে উত্তরপ্রদেশের মেয়ে বলে পরিচয় দিচ্ছেন। আর উত্তরপ্রদেশ-বিহারের বাসিন্দাদের যখন পঞ্জাবে অপমান করা হচ্ছে তখন তিনি হাততালি দেন। এখানেই তাঁর দ্বিচারিতা।’’ মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও।
রাজনীতিকদের একাংশ আরও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘‘ভোটারেরা ভুল করলে উত্তরপ্রদেশের কাশ্মীর, পশ্চিমবঙ্গ বা কেরল হয়ে যেতে বেশি সময় লাগবে না।’’ ধর্মীয় মেরুকরণের পাশাপাশি উগ্র প্রাদেশিকতার প্রশ্নেও এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন বিরোধীরা। তাঁদের প্রশ্ন, কংগ্রেসও কি ওই রাজনীতির পথে হাঁটতে চায়?