NAtional News

ধৃত বিদ্বজ্জনদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারা, প্রশ্নের মুখে পুণে পুলিশ

ধৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভীমা কোরেগাঁওয়ে দলিতদের সঙ্গে উচ্চ বর্ণের সংঘর্ষে মাওবাদী যোগ এবং ওই সংঘর্ষে উস্কানি দেওয়া। কিন্তু এই সব অভিযোগেই মামলা হয়েছে ইউএপিএ ধারায়। তার পরই সরব হয়েছেন বিদ্বজ্জনরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৮ ১৪:০৯
Share:

গ্রেফতারের পর অরুণ ফেরেরা। ছবি: পিটিআই

ভারাভারা রাও-সহ সমাজকর্মীদের গ্রেফতারি ঘিরে তোলপাড় দেশ। দেশে জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে সরব বিদ্বজ্জনদের বড় অংশ। তার মধ্যেই ধৃতদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ (আনলফুল অ্যাকটিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট) ধারা দেওয়ায় তোপের মুখে পুণে পুলিশ। এই আইনে মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছেন বহু সমাজকর্মী। সাধারণত সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এই ধারা প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু সমাজকর্মী, কবি, লেখক, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে কেন এই ধারা দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশের তাবড় বিদ্বজ্জনরা। পাশাপাশি এই গ্রেফতারি নিয়ে মহারাষ্ট্রের ডিজিপিকে চিঠি পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

Advertisement

এ বছরের জানুয়ারিতে মহারাষ্ট্রের ভীমা কোরেগাঁওয়ে দলিতদের বিজয় দিবস পালন অনুষ্ঠানে ব্যাপক গন্ডগোল হয়। সেই ঘটনায় মাওবাদী যোগের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নেমে মঙ্গলবারই দেশের বিভিন্ন শহরে অভিযান চালিয়ে ভারাভারা রাও, অরুণ ফেরেরা, গৌতম নওলাখা, ভার্নন গঞ্জালভেস, সুধা ভরদ্বাজের মতো কবি, আইনজীবী, লেখকদের গ্রেফতার করে পুণে পুলিশ।

ধৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভীমা কোরেগাঁওয়ে দলিতদের সঙ্গে উচ্চ বর্ণের সংঘর্ষে মাওবাদী যোগ এবং ওই সংঘর্ষে উস্কানি দেওয়া। কিন্তু এই সব অভিযোগেই মামলা হয়েছে ইউএপিএ ধারায়। তার পরই সরব হয়েছেন বিদ্বজ্জনরা। আইনজীবী ও সমাজকর্মী প্রশান্ত ভূষণ বলেছেন, ‘‘২০০৭ সালে অরুণ ফেরেরার বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় চারটি মামলা দায়ের করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু কোনও অভিযোগই প্রমাণ হয়নি। অথচ পাঁচ বছর তাঁকে জেল খাটতে হয়েছে। ফের ‘শহুরে মাওবাদী’ তকমা দিয়ে অরুণ ফেরেরা-সহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হল।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ঠিক যেন জরুরি অবস্থা, বললেন অরুন্ধতী, প্রতিবাদ দেশ জুড়ে

রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে দমননীতির অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। সরব হয়েছেন রাজনৈতিক নেতারাও। টুইটারে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর তোপ, ‘‘দেশে একটাই এনজিও চলছে, সেটা আরএসএস। যাঁরাই অভিযোগ তুলবে, তাঁদের গ্রেফতার কর, গুলি কর।’’ সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি লিখেছেন, ‘‘মোদী সরকারের আসল রূপ চিনতে আর কারও বাকি আছে?’’ বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী বলেন, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। দলিতদের অধিকার হরণ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: মাও ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ, দেশজুড়ে গ্রেফতার বেশ কয়েক জন সমাজকর্মী

কিন্তু ইউএপিএ ধারা কী?

দেশের অখণ্ডতা ও ঐক্য বজায় রাখতে ১৯৬৭ সালে এই আইন চালু হয়। এই ধারায় ওয়ারেন্ট ছাড়াই কোনও ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালাতে বা যে কোনও জিনিস বাজেয়াপ্ত করতে পারে। এই ধারায় ধৃত ব্যক্তি জামিনের আবেদন করতে পারেন না। সাধারণ মামলায় চার্জশিটের মেয়াদ ৯০ দন হলেও এই আইনে চার্জশিটের জন্য সময় পাওয়া যায় ১৮০ দিন। পাশাপাশি সরকার যদি কোনও সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রবিরোধী মনে করে, তা হলে ওই সংগঠনের সদস্যদের যে কোনও সময় গ্রেফতার করতে পারে।

(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement