সহমর্মী: নিহত জওয়ানদের পরিজনদের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। শামলিতে বুধবার। নিজস্ব চিত্র
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার ঘটনার এক সপ্তাহও কাটেনি। রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে হাসিমুখে ‘আলিঙ্গন কূটনীতি’ করতে বিমানবন্দরে চলে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত জওয়ানের পরিবারের সঙ্গে আজ দেখা করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় নিহত দুই জওয়ান অমিত কুমার কোরি এবং প্রদীপ কুমারের বাড়িতে যান রাহুল-প্রিয়ঙ্কারা। নিহত জওয়ানদের পরিজনদের সান্ত্বনা দিয়ে প্রিয়ঙ্কা বললেন, ‘‘আমরাও এমন যন্ত্রণা দেখেছি। একা ভাববেন না, সবসময় খেয়াল রাখব।’’ বোনের কথার রেশ ধরেই রাহুল বললেন, ‘‘আমাদের বাবার সঙ্গেও এমনই হয়েছে। তিনিও সন্ত্রাসের শিকার। আপনাদের যন্ত্রণা বুঝি।’’
কাউকে না জানিয়েই দিল্লি থেকে সড়ক পথে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের শামলিতে আজ সকালে রওনা দেন রাহুলেরা। কৈরানার এক ধাবায় বসে চা খেলেন তাঁরা। তার পর সোজা নিহত জওয়ানদের বাড়িতে। রাহুল-প্রিয়ঙ্কা যখন কথা বলছেন, তখন অঝোরে কাঁদছেন নিহত প্রদীপের মা। খাটে বসে তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন প্রিয়ঙ্কা। জওয়ানের ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল।
আরও পড়ুন: সুর নরম করে পাকিস্তানকে ফের আলোচনারই বার্তা মোদীর
মহল্লায় আয়োজিত স্মরণসভার প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘জওয়ানের বাবা বলেছেন, দুঃখ আছে, গর্বও। দেশকে বি ভাজন করতে পারে, ভয় পাওয়াতে পারে, এমন কোনও শক্তি নেই। দেশে ভালবাসা, সম্প্রীতি আছে— এটাই ভারতের বার্তা।’’
অভিযোগ উঠছে, পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা ও জওয়ানদের মৃত্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং গেরুয়া শিবিরের রাজনীতি করছে। তারপরই সরব হতে শুরু করেছেন রাহুলেরা। কংগ্রেস সূত্রের খবর, নিহতদের জওয়ানদের পরিজনেদের কাছে যাবেন নেতারা। উত্তরপ্রদেশে অন্য পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করবেন প্রিয়ঙ্কা। ইতিমধ্যেই ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। মোদী যেভাবে সৌদি যুবরাজকে ‘আলিঙ্গন’ করতে ছুটে গিয়েছেন, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘‘পাকিস্তান সম্পর্কে সৌদি আরব যে নরম অবস্থান নিয়েছে, তা থেকে কি তাদের সরানোর সাহস দেখাতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী?’’
আরও পড়ুন: ভারতই পাখির চোখ, পুঁজিতে বার্তা সৌদির
কংগ্রেসের আর এক নেতা রণজিৎ মুখোপাধ্যায়ের বলেন, ‘‘বাধ্যবাধকতার কারণে সৌদিকে গুরুত্ব দেয় পাকিস্তান, মোদীর কীসের টান!’’
বিজেপি বুঝছে, জওয়ানদের পরিবারে গিয়ে রাহুল-প্রিয়ঙ্কাও আবেগের ভাগ টানতে চাইছেন। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে, যেখানে জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনা সব চেয়ে বেশি। তাই রাজীব গাঁধীর কথা তুলছেন। ঘুঁটি সাজাতে আজই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও দুই উপমুখ্যমন্ত্রীকে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে। মোদী নিজেও কুম্ভে যাচ্ছেন চারদিন পর।