পুলওয়ামায় নিহত জইশ জঙ্গি কামরান।
১৭ ঘণ্টার গুলির লড়াই শেষ। পুলওয়ামা হামলার মূল চক্রী কামরানকে নিকেশ করল ভারতীয় সেনা। সেই সঙ্গে আরও দুই জইশ জঙ্গি নিহত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে এক স্থানীয় বাসিন্দার। অন্য দিকে, দিনভর গুলির লড়াইয়ে চার সেনা এবং এক পুলিশ কর্মীর ত্যু হয়েছে।
পুলওয়ামার পিংলান গ্রামে একটি বাড়িতে বেশ কয়েক জন জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে, এই খবর পাওয়ার পরই রবিবার গভীর রাত থেকে শুরু হয়েছিল তল্লাশি। সেই সময়ই জঙ্গিরা গুলি চালাতে শুরু করে সেনাবাহিনীর উপরে। জঙ্গিদের গুলিতেই মৃত্যু হয় এক মেজর সহ তিন সেনা কর্মীর। তখনই এক দক্ষিণ কাশ্মীরের ডিআইজি অমিত কুমার সহ আরও কয়েক জন সেনা ও পুলিশের কর্মী আহত হন। বিকেলের দিকে এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। ডিআইজি অমিত কুমারের অবস্থা গুরুতর। তাঁর পেটে গুলি লাগে। তাঁকে সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অমিত কুমার স্থিতিশীল রয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মেজর ডি এস দোন্ডিয়াল, হেড কনস্টেবল সেভ রাম, আব্দুল রশিদ, অজয় কুমার ও হরি সিং।
অন্য দিকে, গুলির লড়াইয়ে সকালের দিকেই মৃত্যু হয় পুলওয়ামা হামলার মূল চক্রী জইশ জঙ্গি কামরান। সেই সময় হিলাল নামে আরও এক জইশ জঙ্গির মৃত্যু হয়। এছাড়া এক স্থানীয় বাসিন্দাও মারা যান। কিন্তু তখনও এক জঙ্গি লুকিয়ে থাকায় গুলির লড়াই চলছিল। সেই জন্যই গোটা এলাকা ঘিরে রাখে সেনা ও নিরাপত্তা কর্মীরা। দিনভর গুলির লড়াই চলে। সন্ধ্যার দিকে ওই জঙ্গিকেও নিকেশ করার পর শেষ হয় গুলির লড়াই। তবে তৃতীয় ওই জঙ্গির পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনার হাতে আসছে শক্তিশালী ও উন্নত অ্যাসল্ট রাইফেল সিগ৭১৬
কোথায় কীভাবে হামলা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
এই কামরানই অবন্তীপোরায় সেনা কনভয়ে আইইডি হামলার মূল চক্রী, এমনটাই নিশ্চিত করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। বৃহস্পতিবারের হামলার পর নিয়মিত সেনা তল্লাশি চলার সময় সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে জঙ্গিরা। এই হামলার নেতৃত্বে ছিল কামরানই। দীর্ঘক্ষণ প্রত্যাঘাত করে সেনাবাহিনীও। যে ভাবে সেনা ঘিরে রেখেছিল কামরান ও তার সঙ্গীদের।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে ঘটে যাওয়া এই জঙ্গি সন্ত্রাসগুলো সম্পর্কে জানেন?
বৃহস্পতিবার অবন্তীপোরায় হামলায় পর সিআরপিএফ সূত্রে জানানো হয়েছিল, ওই এলাকায় নিরাপত্তা দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে। কনভয়ের গতিতেও পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছিলেন সিআরপিএফের ডিজি রাজীব ভাটনগর। তিনি বলেন, ‘‘যান নিয়ন্ত্রণকে বাদ দিলে কনভয়েরও সময়েও পরিবর্তন করার কথা হয়েছে। কনভয় থামা ও বাকি গতিবিধিও নিরাপত্তাবাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে সংযোগ বজায় রেখেই করা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন:সেনা প্রস্তুত কতটা!
গুলি বিনিময় শুরু হওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছিলেন, ‘‘সেনা জওয়ানরা দক্ষ হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। জঙ্গিদের নিকেশ করতে সেনা ও নিরাপত্তা কর্মীরা সফল হবেন।’’