আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনের সামনে এ দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে একটি সংগঠন। ছবি: পিটিআই।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপরে আক্রমণের বিভিন্ন ঘটনা এবং ধর্মগুরু চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখানো হল ত্রিপুরা ও অসমে। আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনের সামনে এ দিন বিক্ষোভ দেখিয়েছে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে একটি সংগঠন। এই কর্মসূচি থেকে কয়েক জন বিক্ষোভকারী সহকারী হাই কমিশনের চত্বরে ঢুকে পড়ে পতাকাদণ্ডটি ভেঙে দেয়। অসমের শ্রীভূমি সীমান্ত দিয়ে কোনও পণ্য বাংলাদেশে না-পাঠানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমদানিও অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ আগরতলা সার্কিট হাউস এলাকায় হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির সভায় বিজেপি, আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের রাজ্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁরা বিক্ষোভ দেখানোর জন্য বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনের সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ এবং সিআরপি তাঁদের আটকে দেয়। পরে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য ছ’জনের একটি প্রতিনিধিদল সেখানে যায়।
প্রতিনিধিদলের তরফে আরএসএস-এর ত্রিপুরা প্রান্ত সঙ্ঘচালক বিমলকুমার রায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে আক্রমণ, সম্পত্তি লুটপাট চলছে। তার প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।” সহকারী হাই কমিশনের ভিতরে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির সমর্থকরা হামলা, ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ। বিমল বলেন, “আমাদের প্রতিনিধিদল ভিতরে গেলে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনাই হয়। বেরিয়ে শুনি গন্ডগোল হচ্ছে। পরে শুনেছি কিছু লোক ভিতরে ঢুকে পড়েছিল।”
বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক সন্ধ্যায় বিবৃতিতে ঘটনার নিন্দা করে বলেছে, কয়েক জন বিক্ষোভকারী সহকারী হাই কমিশনের ফটক ভেঙে চত্বরে ঢুকে গুন্ডামি করে, পতাকাদণ্ডটি ভেঙে দেয়। পতাকার অবমাননা করা হয় বলেও তাদের অভিযোগ। ‘পরিকল্পিত’ এই আক্রমণের পরে কূটনৈতিক ভবনের কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই হামলার কড়া নিন্দা করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও। বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, এই ঘটনার পরে দিল্লির বাংলাদেশ হাই কমিশন দফতর এবং দেশের সব বাংলাদেশি কূটনৈতিক ভবনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
অসমের শ্রীভূমি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। জেলা আমদানি-রফতানি সমন্বয় কমিটির কর্মকর্তা অমরেশ রায় বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এই বাণিজ্য বন্ধ রাখবেন। স্থানীয় বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ এ দিন জলসীমান্ত পথে বাঁশ বেঁধে অবরোধ গড়ে দেন।