জঙ্গি-বিরোধী অভিযানের সময়ে ফের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় অভিযুক্ত কাশ্মীরের সেনা ও পুলিশ।
অভিযোগ, জঙ্গিরা পালিয়ে গেলেও অকারণে সেনা-পুলিশ গুলি করে মারে কিশোর মহম্মদ উমর কুমারকে। পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গি ও সেনা-পুলিশের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে ১৪ বছরের উমরের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার দাদা মহম্মদ আশরাফ কুমার এ দিন জানিয়েছেন, সংঘর্ষের এলাকা থেকে অন্তত এক কিলেমিটার দূরে উমরকে খুব কাছ থেকে গুলি করে মারা হয়েছে।
বুধবার সোপিয়ানের জাইনাপোরা এলাকার তুর্কাওয়াঙ্গাম গ্রামে একটি বাড়িতে জঙ্গিরা জড়ো হয়েছে খবর পেয়ে সেনা ও পুলিশের যৌথ বাহিনী হাজির হয়। গ্রামটি ঘিরে ফেলার পরে গুলির লড়াই শুরু হয়। আশরাফ জানিয়েছেন, কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে তাঁর ভাই উমর তুর্কাওয়াঙ্গামের এক কিলেমিটার আগে দারাজপোরা গ্রামে পৌঁছে খবর পায় সামনে রাস্তা বন্ধ, গোলাগুলি চলছে। সে সময়ে সংঘর্ষ থেমে গিয়েছে। জঙ্গিরা পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু দারাজপোরায় আপেল বাগানের মধ্যে গা-ঢাকা দেওয়া সেনা ও পুলিশ হঠাৎ উমর ও তার সমবয়সি বন্ধুদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে।
বন্ধুরা মাথা নিচু করে গুলি এড়াতে পারলেও উমর পারেনি। একটি বুলেট বুকে এসে বেঁধে। যৌথ বাহিনী গুলি করা চালিয়ে যাওয়ায় তখন তাকে তুলে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া যায়নি। পরে যখন বন্ধুরা তাকে সোপিয়ান জেলা হাসপাতালে নিয়ে য়ায়, তখন সব শেষ।
আশরাফ জানিয়েছেন, পিনজোরা সরকারি হাইস্কুলে ক্লাস নাইনে পড়তো তাদের ছোট ভাই উমর। বাবা মারা গিয়েছেন বছর দুয়েক আগে। লাজুক স্বভাবের কিশোরটি পাঁচ ওয়াক্ত নমাজ পড়তো। শুক্রবার স্কুলের পোশাকেই তাকে দাফন করা হয়। সেখানেই আশরাফ বলেন, ভাইয়ের এই মৃত্যুর বিচার চান তিনি।
শোপিয়ানের সিনিয়র পুলিশ সুপার শৈলেন্দ্র মিশ্র জানিয়েছেন, সংঘর্ষের সময়ে এক কিলোমিটার দূরেও জওয়ানেরা পাহারায় থাকেন। অনেক সময় অভিযান চালানো সেনা ও পুলিশের দিকে স্থানীয় কিশোরেরা পাথর ছোড়ে। এ ক্ষেত্রে তেমন কোনও ঘটনা ঘটেছে কি না, তিনি খবর নেবেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে এড়ানো য়ায়, বাহিনী সে দিকে নজর রাখবে।