অসমে একমাত্র অসমিয়াকেই সরকারি ভাষা হিসেবে গণ্য করা উচিত— কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাইয়ের ওই বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভ ছড়াল বরাকজুড়ে। উপত্যকার বিজেপি নেতারা অবশ্য ওই বক্তব্যকে রাজেনবাবুর ব্যক্তিগত মতামত বলে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছেন।
কাছাড় থেকে হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ— সব জায়গাতেই শোনা গিয়েছে অসন্তোষের আওয়াজ।
প্রতিবাদে সরব ভাষা বিজ্ঞপ্তি-বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা লোপামুদ্রা চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘‘বাঙালি-অসমিয়াদের মধ্যে সংস্কৃতির তেমন ফারাক নেই। এ রাজ্যে বাংলা ও অসমিয়া মিলেমিশে থেকেছে, সমৃদ্ধ হয়েছে। অসমে বাংলা ও অসমিয়া একে অপরের পরিপূরক। ভাষাগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে সেই ঐক্য নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে।’’ তাঁর বক্তব্য, বরাকে বাংলা ভাষা বাঁচাতে ১৩ জন আত্মবলিদান দিয়েছেন। বরাকবাসী তা কখনও ভুলবেন না।
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি সম্মেলনের প্রাক্তন উপ-সভাপতি রথীন্দ্র ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সাংসদের এ ধরনের বক্তব্য অসাংবিধানিক। ব্রিটিশ জমানা থেকে বরাকে বাংলা ভাষার প্রচলন ছিল। কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অসমের সর্বময় কর্তা নন।’’ রাজেনবাবুর বক্তব্য একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত মতামত বলে উল্লেখ করেছেন বিজেপি নেতা মিশনরঞ্জন দাস। তিনি বলেন, ‘‘রাজেনবাবু কী কারণে ওই মন্তব্য করেছেন তা জানতে হবে। বাংলা ভাষা রক্ষার তাগিদে প্রয়োজনে ফের আন্দোলন করা হবে।’’
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতীশ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েও রাজেনবাবু ওই বিভেদমূলক মন্তব্য করে সংবিধান অবমাননা করেছেন।’’ লালার সংস্কৃতিকর্মী জয়নালউদ্দিন লস্কর অসমের সরকারি ভাষা হিসেবে একমাত্র অসমিয়াকে স্বীকৃতি দেওয়ার বক্তব্যে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। রাজেনবাবুর মন্তব্যে অসন্তুষ্ট শিলচরের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আশিস ভৌমিকও। তিনি বলেন, ‘‘ওই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’’